গাজোলে আদি শ্যামা কালীর পুজোয় বংশ পরম্পরায় যুক্ত ঢাকি, মৃৎশিল্পী, সেবায়েতরা
বর্তমান | ২৯ অক্টোবর ২০২৪
সংবাদদাতা, পুরাতন মালদহ: প্রায় ২২৯ বছর আগে গাজোল হাটের আদি শ্যামা কালীর পুজো ধুমধাম সহকারে করেন তৎকালীন জমিদার প্রয়াত দুর্লভ রাম নন্দী চৌধুরী। সেই ঐতিহ্য আজও রয়েছে। শুধু তাই নয়, বংশ পরম্পরায় ওই শ্যামা কালীর পুজোর সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন ঢাকি, মৃৎশিল্পী, সেবায়েতরা। যাঁরা বলি দেন, তাঁরাও বংশ পরম্পরায় এই কাজ করে আসছেন। এমনটাই দাবি পুজো উদ্যোক্তাদের।
নিয়ম মেনে নিরামিষ আহার ভোজন করে লক্ষ্মী পুজোর পর থেকে প্রতিমা গড়ার কাজ শুরু করেছেন স্থানীয় মৃৎশিল্পী। প্রাচীন রীতি অনুযায়ী, অমাবস্যার লগ্নের পরেই মায়ের চক্ষুদান, রঙ সহ গয়না পরানো হবে। এছাড়াও ঐতিহ্য মেনে শ্যামা মা মন্দিরে প্রবেশ করেন ভক্তদের কাঁধে চড়ে। তারপর মধ্য রাতে তন্ত্রমতে পুজো হয়।
পুজোতে অন্নভোগ দেওয়ার নিয়ম নেই। ফল,লুচি দিয়ে মায়ের সেবা দেওয়া হয়। তবে পুজো মণ্ডপ সংলগ্ন এলাকায় পাঁঠা বলি দিতে ভক্তরা আসেন। পুজোর রাতে হাজারের বেশি ছাগ বলি দেওয়া হয়।
অমাবস্যা শেষ হলে কালীদিঘিতে শ্যামা মাকে নিরঞ্জন করা হয়।
সংশ্লিষ্ট মন্দির সূত্রে জানা গিয়েছে, গাজোলে আদি শ্যামা কালী পুজো বহু পুরনো। তৎকালীন জমিদার, তাঁর পরিবারের সদস্যরা নিজেদের অর্থ দিয়েই মায়ের পুজো করতেন। বাইরে থেকে কোনও চাঁদা নেওয়া হতো না। এখন পুজোর দায়িত্বে রয়েছেন সংশ্লিষ্ট জমিদার বাড়ির সদস্য অরিন্দম নন্দী চৌধুরীরা।
তাঁরা এখন বর্ধমানে থাকেন। পুজোয় সপরিবারে গাজোলে আসেন। শ্যামা মায়ের মন্দিরের সেবায়েত অমন কুমার ঝাঁ বলেন, আমাদের কাছে যা নথি রয়েছে,সেই হিসাবে মায়ের পুজোর বয়স ২২৯ বছর। তবে তার আগেও পুজো হতো।
জমিদার পরিবারের সদস্যরা সব অর্থ দেন। পুজোতে বহু নিয়ম রয়েছে। ঢাকি, মৃৎশিল্পী সহ অন্যান্যরা বংশ পরম্পরায় মায়ের পুজোর সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। এর আগে আমাদের পরিবারের প্রবীণ সদস্যরা পুজো করেছেন। সেই ধারা আজও পরবর্তী প্রজন্ম বজায় রেখেছে। বংশ পরম্পরায় মৃৎশিল্পী উত্তম চৌধুরী মায়ের প্রতিমা গড়েন। তিনি বলেন, প্রতিমা গড়ার জন্য লক্ষ্মী পুজোর পর থেকে আমি নিরামিষ খাচ্ছি। অমাবস্যা তিথিতে মায়ের চক্ষুদান হবে। তারপরই মায়ের পুজো হবে। - ফাইল চিত্র