ইন্দ্র মহন্ত, বালুরঘাট: ৩০০ বছরের বেশি সময় ধরে বালুরঘাটে পূজিতা হয়ে আসছেন বুড়া কালী মা। ভক্তরা কেউ ডাকেন বুড়ি মা, আবার অনেকে বুড়া মা বলেন। এপার ও ওপার বাংলার দিনাজপুর এলাকার অধিষ্ঠাত্রী দেবী বলে মানা হয় এই বুড়া কালীমাকে। বছরভর সকাল, সন্ধ্যা নিয়ম মেনে পুজো হয়। তবে মূল পুজো দীপাবলির রাতে। পাশাপাশি কৌশিকী অমাবস্যা, চৈত্র সংক্রান্তিতে ঘটা করে পুজো হয়। ওইদিন মাকে পাঁঠার মাংস, বোয়াল, শোল মাছ দিয়ে ভোগ দেওয়া হয়।
পুজো কমিটির সভাপতি গোপাল পোদ্দার বলেন, বুড়া কালীমা শহরের পাশাপাশি জেলার মানুষের কাছে আবেগ। দীপান্বিতার রাতে মূল পুজো ঘিরে ভক্তদের ঢল নামে। নিয়ম মেনে আমরা পুজোর আয়োজন করে চলেছি। জনশ্রুতি অনুযায়ী, তিন শতাব্দী আগে স্থানীয় এক বাসিন্দার গাভী হারিয়ে যায়। অনেক খোঁজাখুঁজির পরেও খোঁজ মেলেনি। পরে বুড়ির রূপ ধারণ করে মা কালী সেই ব্যক্তিকে নির্দেশ দেন আত্রেয়ীর পাড়ের জঙ্গলে গিয়ে খুঁজতে। তাঁর দেখানো পথ অনুযায়ী গিয়ে ওই বাসিন্দা দেখেন জঙ্গলের ভিতর বালির মধ্যে পড়ে থাকা একটি পাথরের মতো কোনও কিছুকে গাভীটি দুধ দিয়ে স্নান করিয়ে দিচ্ছে। জঙ্গল থেকে পাথরটি তিনি তুলে এনে আত্রেয়ীর পাড়ে প্রতিষ্ঠা করে পুজো শুরু করেন। সেই থেকে এই পুজো বুড়ি মা কালী বলে খ্যাত হয়।
পুজোর দিন মায়ের কষ্ঠি পাথরের মূর্তিকে সোনার গয়না দিয়ে সাজিয়ে রুপোর বাসনে পুজোর আয়োজন করা হয়। আগে অমাবস্যার পুজোয় ২০ কেজি ওজনের বোয়াল মাছ বলি দেওয়া হত। এখন ওই ওজনের না পাওয়ায় মোটামুটি ওজনের বোয়াল, শোল দেওয়া হয়। সঙ্গে পাঁঠার মাংস দিয়ে অন্নভোগ। তবে সেই ভোগে পিয়াজ ও রসুন ব্যবহার করা হয় না।
এখানে একাধিক পুরোহিত পুজোয় সাহায্য করেন। বিয়ে, অন্নপ্রাশন, জন্মদিনে শহরের পাশাপাশি দূরদূরান্ত থেকে ভক্তরা এসে পুজো দেন।