• স্বপ্নাদেশ পেয়ে ঝুমুরকালী পুজো শুরু করেন জমিদার
    বর্তমান | ২৯ অক্টোবর ২০২৪
  • দিবাকর মজুমদার, ইটাহার: প্রায় ৩০০ বছর আগে স্বপ্নাদেশ পেয়ে তৎকালীন জমিদার পোরষা এলাকার জঙ্গলে সূচনা করেন ঝুমুরকালীর পুজো। ছয় পুরুষ ধরে সেই ধারা এগিয়ে নিয়ে চলেছে ইটাহারের ঘোষ পরিবার। খোলা আকাশের নীচে পাথরের মুর্তিতে হয় মায়ের আরাধনা। স্থানীয় থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিস আধিকারিক মাথায় ডালা নিয়ে মন্দিরে পৌঁছলে শুরু হয় পুজো। তারপর একে একে চার বোনের পুজো দেওয়া হয়। 


    স্থানীয়রা জানান, দুর্গাপুরের ভূপালপুর রাজবাড়ির জমিদার ভূপালচন্দ্র রায় চৌধুরীর একটি হাতি দলছুট হয়ে হারিয়ে যায়। অনেক খোঁজাখুজি করেও তার হদিশ পাওয়া যায়নি। পরে ঝুমুরকালীর স্বপ্নাদেশে জমিদার জানতে পারেন পোরষা এলাকায় জঙ্গলে রয়েছে হাতিটি। প্রবীণদের কথায়, এরপর জমিদার প্রজাদের সঙ্গে নিয়ে পোরষা এলাকার জঙ্গলে নিখোঁজ হাতিটিকে খুঁজে পান। কিন্তু জমিদার হাতি নিয়ে চলে গেলেও ঝুমুরকালী মায়ের পুজো করেননি। ফলে ফের ভূপালচন্দ্র স্বপ্নাদেশ পেয়ে সেই জঙ্গলে গেলে ঝুমুরকালীর একটি ছোট পাথরের মূর্তি পান। এরপর থেকেই পোরষা এলাকার জঙ্গলে মায়ের মূর্তি বসিয়ে পুজোর সূচনা করেন জমিদার। পাশাপাশি মায়ের নামে ৬ শতক জমি দান করে পুজোর দায়িত্ব দেন স্থানীয় মঙ্গল ঘোষকে। তারপর থেকে মঙ্গলের বংশধর সুকারু ঘোষ, জীতেন ঘোষরা পুজো করে আসছিলেন। বর্তমানে পোরষার ঘোষ বংশের ভোলা ঘোষ, গণেশ ঘোষরা জমিদারি রীতি মেনে পুজো করছেন। দুর্গাপুর জমিদার বাড়ির বর্তমান বংশধর অভিষেক রায় চৌধুরী বলেন, আমাদের পূর্বপুরুষ ইটাহারের বিভিন্ন জায়গার ঝুমুরকালী পুজোর সূচনা করেন। স্থানীয়রা সেই পুজো পরিচালনা করে আসছেন।


    স্থানীয় থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিস আধিকারিক থানা থেকে ঢাক বাজিয়ে মাথায় ডালা নিয়ে ঝুমুরকালী মন্দিরে পৌঁছনোর পর  পুজো শুরু হয়। মায়ের থানের উপরে নেই কোনও চালা। পাথরের ছোট মূর্তিতেই ধুমধাম করে পুজোর আয়োজন করা হয়। এমনকি ঝুমুর মায়ের পুজো শেষ না হলে শুরু হয় না ইটাহারের আনন্দকালী, দক্ষিণাকালী, মসনাকালী ও জয়কালী চার বোনের পুজো। এই পুজো আয়োজনের জন্য চাঁদা নেওয়া হয় না। ঘোষ পরিবারের আর্থিক সাহায্য ও ভক্তদের দানে নির্ভর এই পুজো। ঘোষ বংশধর কার্তিক বলেন, ছয় পুরুষ ধরে জমিদারি প্রথা মেনে এই পুজো করে আসছি। ভক্তদের জন্য সবরকম আয়োজন হয়।  নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)