• ৪০০ বছরের প্রাচীন বুড়ো কালীপুজো ঘিরে মেতে ওঠে ইংলিশবাজার শহর
    বর্তমান | ২৯ অক্টোবর ২০২৪
  • সৌম্য দে সরকার, মালদহ: ইংলিশবাজার শহরের প্রাচীন কালীপুজোগুলির মধ্যে অন্যতম বুড়ো কালীর আরাধনা। ইংলিশবাজার পুরসভার ঠিক উল্টো দিকের গলিতে রয়েছে বুড়ো কালীমাতার মন্দির। প্রায় ৪০০ বছরের পুরনো এই কালীপুজো ঘিরে মালদহ শহরের মানুষের মধ্যে রয়েছে গভীর নিষ্ঠা এবং শ্রদ্ধা। এই কালীপুজোতে ভোগ দেওয়া হয় ছোলার ডাল মিশ্রিত খিচুড়ি দিয়ে। ইংলিশবাজার পুরসভার চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী দলীয় কার্যালয় লাগোয়া এই মন্দিরে মাথা ছুঁইয়ে তবেই কোনও গুরুত্বপূর্ণ কর্মকাণ্ড শুরু করেন। অকপটে সেকথা জানিয়েছেন কৃষ্ণেন্দুবাবু। তিনি বলেন, এই কয়েকশ বছর ধরে পূজিত হয়ে আসা বুড়ো কালীমাতার নামেই এই এলাকার নাম হয়েছে কালীতলা।


    মন্দিরের সেবায়েত প্রসূন ভট্টাচার্য বলেন, বুড়ো কালীমাতা অত্যন্ত জাগ্রত বলে গভীর বিশ্বাস রয়েছে মালদহবাসীর মনে। শুধু মালদহ শহর নয়, ভিন জেলা ও রাজ্যের পাশাপাশি বাংলাদেশ থেকেও বুড়ো কালীমাতার পুজো দিতে আসেন অনেকে। আগে ছাগবলি দেওয়া হতো অসংখ্য। তবে বলির সংখ্যা কিছুটা কমলেও মালদহ শহরের এই কালীপুজোতেই সবচেয়ে বেশি পশুবলি হয় এখনও।


    সেবায়েত বলেন, বুড়ো কালীমাতার আরও চারজন বোন রয়েছেন। তাঁদেরও পুজো হয় দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন পুর বাজার সংলগ্ন এলাকায়। আগে কালীমূর্তি মাটি দিয়ে তৈরি হতো। কিন্তু বিভিন্ন কারণে ১৯৮৭ সালে কালো পাথর দিয়ে স্থায়ী মূর্তি নির্মিত হয়। এই পাথরের মূর্তিতেই প্রায় তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে পুজো হয়ে আসছে নিয়মিত। অনেকেই প্রতিদিন মায়ের খাঁড়া ধোয়া জল নিয়ে যান অত্যন্ত পবিত্র বিবেচনা করে। দীপান্বিতা অমাবস্যা ছাড়াও ফলহারিণী কালীপুজোতেও বুড়ো কালীমাতার বিশেষ পুজো হয়ে থাকে। 


    কৃষ্ণেন্দুবাবু বলেন, এক সময় ডাকাত সর্দাররা এই কালীপুজো আরম্ভ করেছিলেন বলে কথিত রয়েছে। মাতৃ মন্দিরের ঠিক উল্টো দিকে রয়েছে শিব মন্দির। একবার আমার ওপরে বোমা নিয়ে আক্রমণ করেছিল দুষ্কৃতীরা। আমার বন্ধু প্রাণ হারান। কিন্তু শুধু বুড়ো কালীমাতার দয়ায় আমি বেঁচে যাই। আমাকে দ্বিতীয় জীবন দিয়েছেন বুড়োকালীই। এই মন্দিরে আমি ছয় বছর বয়স থেকে যাতায়াত করি। বুড়ো কালীর প্রতি আমার ভক্তি অবিচল।  নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)