ইংরেজ বণিকদের পৃষ্ঠপোষকতায় শুরু হ্যামিল্টনগঞ্জ কালীবাড়ি মন্দিরের পুজো, এবার ১০৮ বছরে পা রাখছে কালী আরাধনা
বর্তমান | ২৯ অক্টোবর ২০২৪
সংবাদদাতা, আলিপুরদুয়ার: তখন ব্রিটিশ শাসন। কালচিনির রায়মাটাং, কালচিনি, চিঞ্চুলা ও ডিমা চা বাগানের মালিকানা ছিল ইংরেজ বণিকদের বাকসা টি কোম্পানির অধীনে। বাগানের শ্রমিকদের মনোরঞ্জনের জন্য বাকসা টি কোম্পানি চালু্ করেছিল হ্যামিল্টনগঞ্জ কালীবাড়ির পুজো। ইংরেজ বণিকদের পৃষ্ঠপোষকতায় শুরু হওয়া সেই হ্যামিল্টনগঞ্জ কালীবাড়ি মন্দিরের পুজো এবছর ১০৮ বছরে পড়ল। সেই সময় বাকসা টি কোম্পানির অন্যতম কর্তা ছিলেন হ্যামিল্টন সাহেব। যাঁর নামেই আজকের হ্যামিল্টগঞ্জ এলাকা ও ঐতিহাসিক হ্যামিল্টনগঞ্জ স্টেশনের নাম।
হ্যামিল্টনগঞ্জ কালীবাড়ি পুজোর প্রস্তুতিও জোরকদমে শুরু হয়ে গিয়েছে। পুজো উপলক্ষ্যে হ্যামিল্টনগঞ্জ কালীবাড়ির মাঠে ১১ দিনের জমজমাট মেলাও বসবে। মেলার বয়স এবার ৯০ বছর। মেলার জন্য প্রশাসনের ছাড়পত্রও ইতিমধ্যেই মিলেছে।
হ্যামিল্টনগঞ্জ কালীবাড়ির পুজো স্থায়ী মন্দিরে হয়। আগে মাটির প্রতিমাতেই পুজো হতো। কয়েক বছর আগে রাজস্থান থেকে মায়ের কষ্টিপাথরের মূর্তি আনা হয়েছে। দাম পড়েছিল ৮৪ হাজার টাকা। তখন থেকে প্রতিবছর কষ্টিপাথরের মূর্তিতেই মায়ের পুজো হয়ে আসছে।
পুজো কমিটির সম্পাদক সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় বলেন, তবে পুজোয় মায়ের নৈবদ্যে পাঁঠার মাংস নিবেদন করে ছেড়ে দেওয়া হয়। তিনি জানান, মন্দিরে স্থায়ী পুরোহিত দিয়েই মায়ের পুজো করা হয়। বহু বছর ধরে হ্যামিল্টনগঞ্জ কালীবাড়ি মন্দিরের পুরোহিত হিসেবে মায়ের পুজো করে আসছেন কেদারনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে কমল গঙ্গোপাধ্যায় নামে আরএকজন পুরোহিত যোগ দেন।
হ্যামিল্টনগঞ্জের কালীপুজোর মেলা শুরু হচ্ছে ৩১ অক্টোবর থেকে। চলবে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত। মেলার জন্য আলাদা করে কমিটি রয়েছে। মেলা কমিটির যুগ্ম সম্পাদক সুকুমার ঘোষ ও পরিমল সরকার বলেন, মেলার জন্য প্রশাসনিক ছাড়পত্র চলে এসেছে। মেলাটি চালু হয়েছিল পুজো শুরু ১৮ বছর পরে। সেই হিসেবে এবছর মেলার বয়স ৯০ বছরে পড়বে।
ইংরেজ আমলে হ্যামিল্টনগঞ্জের কালীপুজোর মেলায় মোরগ লড়াইয়ের আসর বসত। তাতে বাজি রাখতেন শ্রমিকরা। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মোরগ লড়াই খেলা তুলে দেওয়া হয়। - নিজস্ব চিত্র।