মঙ্গল ঘোষ, পুরাতন মালদহ: তিনশো বছর ধরে পুজোর নিশি রাতে পুরাতন মালদহে বুড়ি ও রক্ষাকালীকে মাথায় নিয়ে মিলন নৃত্য করার রীতি আজও অমলিন। এবারও পুজোর পর সেই ঐতিহ্যবাহী নৃত্যের জোর প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। জনশ্রুতি রয়েছে, রক্ষা এবং বুড়িকালী সম্পর্কে দুই বোন। সেজন্য নিয়ম অনুযায়ী দুই দেবীকে এক জায়গায় এনে সম্মুখে মিলন করানো হয়। বাজে ঢাক এবং কাঁসরও। আনন্দে মেতে ওঠেন সবাই। তারপর ভোরের আগে দুই দেবীর বিসর্জন দেওয়া হয়। এই মিলন নৃত্য দেখতে ভিড় জমান বহু ভক্ত।
পুজো উদ্যোক্তারা জানিয়েছে, রক্ষা ও বুড়িকালীর রূপ আলাদা। রক্ষাকালী নীল বর্ণের। বুড়ি মা কালী কালো বর্ণের। তবে দুজনের উচ্চতা দেড় ফুটের। দুই দেবীর পা সামনের দিকে থাকে। পাঁঠা বলি দেওয়ার রীতি এখনও রয়েছে। দেবীকে মাথায় করে নিয়ে এসে পুজো মণ্ডপের আসনে বসানোর নিয়ম রয়েছে। অমাবস্যার রাতে বুড়ি ও রক্ষা কালীর পুজো হয়। তবে ভোর হওয়ার আগে মিলন করিয়ে বিসর্জন দেওয়া হয়। এই ঐতিহ্যময় পুজোগুলি কিন্তু একসঙ্গে হয় না। বুড়ি মা কালীর পুজো হয় পুরসভা রোড চত্বরের গলির মধ্যে। তার একটু ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে রক্ষা মায়ের পুজো হয়। দুই পুজোর উদ্যোক্তারাও আলাদা। বাজেটও আলাদা। সেবায়েতরাও আলাদা। বুড়ি মা কালীপুজো কমিটির সভাপতি তথা ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলার বশিষ্ঠ ত্রিবেদী বলেন, এই পুজো শহরের খুব প্রাচীন পুজো। সূর্য ওঠার আগে বিসর্জন হয়। তার আগে মূর্তি তৈরি হয়। অমাবস্যার রাতে প্রতিমার মিলনকে ঘিরে প্রবল উন্মাদনা দেখা যায়। বহু দূর থেকে দর্শনার্থীরা এই নৃত্য দেখতে আসেন। রক্ষাকালী পুজো সেবায়েত বাবাই বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, প্রায় তিনশো বছরের পুরনো এই পুজো। মায়ের রূপ নীল বর্ণের হয়। পুজোর প্রধান বৈশিষ্ট্য মাকে বেশিক্ষণ রাখার নিয়ম নেই। সূর্য ওঠার আগেই মাকে বিসর্জন দিতে হয়। তার আগে মাথায় করে পাশে বুড়ি মায়ের সঙ্গে মিলন করাতে হয়। সেখানে মিলন নৃত্য হয়। এলাকা পরিক্রমা করে। নিজস্ব চিত্র