মধ্য এবং দক্ষিণ কলকাতায় সোমবার একাধিক পুজোর উদ্বোধন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। নিজের নির্বাচনী কেন্দ্র ভবানীপুরের অন্তর্গত শেক্সপিয়র সরণির একটি পুজোর মণ্ডপে তিনি ভোটের প্রসঙ্গ তোলেন। পুরসভা ও বিধানসভা ভোটে জিতলেও এখানে লোকসভা ভোটে তৃণমূলের খারাপ ফলের প্রসঙ্গ টেনে মমতা বলেন, ‘‘বিধানসভায় আপনারা আমাকে সমর্থন দিয়েছেন। কে, কোন বুথে কত ভোট পেয়েছে, সব আমার হাতে আছে। বুথে ৯০০ থাকলে, আমরা একটা পেয়েছি! এতে কোথাও নিজেদের মধ্যে সদ্ভাব নষ্ট হয়ে যায়।’’ এই মন্তব্যে তাঁর যুক্তি, ‘‘বাংলায় থাকুন, বাংলাকে ভালবেসে। এখানে কেউ প্রশ্ন করবে না যে, আপনি কোন জাত, কোন ধর্মের, কী খাবেন।’’
কালীপুজো এবং দীপাবলিতে বাজি পোড়ানোয় দুর্ঘটনা ও শব্দদূষণে প্রায় প্রতি বছরই দুশ্চিন্তা তৈরি হয়। এ বার তার আগে ফের এক বার সকলকে সতর্ক থাকার কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। মধ্য কলকাতায় একাধিক পুজোর উদ্বোধন করে এ দিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমি একটা বাজি পোড়ালাম, সেটা আর এক জনের গায়ে গিয়ে পড়ল। আপনার বাজি অন্য এক জনের ঘরে আগুন লাগাতে পারে। সেটা যেন না হয়।’’ আলোর সজ্জা নিয়েও সতর্ক থাকার বার্তা দিয়েছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‘শব্দদূষণ ও বায়ূদূষণ বন্ধ করতেও আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।’’
পাশাপাশি, মমতা এ দিন উৎসবে সামাজিক বিভেদ দূর করার কথাও বলেছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘দুষ্টুমি নয়, সাম্প্রদায়িক বিবাদ নয়, অশান্তি নয়। সকলকে সঙ্গে নিয়ে একসঙ্গে থাকতে হবে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘মায়ের কাছে আমরা টাকা-পয়সা চাই না। আমরা কী চাই? আমরা শক্তি চাই, মুক্তি চাই।’’ রাজ্যকে বদনাম করার অভিযোগও ফের তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘কিছু লোক আছে, সারাক্ষণ বদনাম করে বেড়ায়। আমাকে বদনাম করতে গিয়ে বাংলাকে বদনাম করবেন না। বাংলা যা পারে, আর কেউ তা পারে না।’’ দক্ষিণ কলকাতার একটি পুজো উদ্বোধন করে ‘জয় বাংলা’ ধ্বনিও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর মন্তব্য, ‘‘কেউ কেউ ভোটের আগে বাঙালি-অবাঙালি করেন। এটা আমার পছন্দ নয়।’’
সদ্য পেরিয়ে আসা দুর্গোৎসবের ব্যবস্থাপনায় প্রশাসনের ভূমিকার প্রশংসা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘বন্যা থেকে খেলা, খেলা থেকে পুজো, পুজো থেকে সিনেমা সব ক্ষেত্রে ওরা ভাল কাজ করে।’’