এমন এক জনকে কী ভাবে মন্ত্রীর সঙ্গে এক মঞ্চে তোলা হল এবং ‘সমাজসেবী’ বলে সংবর্ধনা দেওয়া হল— সেই প্রশ্ন উঠেছে তৃণমূলের মধ্যেই।
বালুরঘাটের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি ও প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান লগিন মাদক মামলায় প্রায় পাঁচ বছরের সংশোধনাগার-পর্ব কাটিয়ে গত লোকসভা ভোটের কয়েক দিন আগে ছাড়া পান। রবিবার বালুরঘাটের নাট্যমন্দির মঞ্চে তৃণমূলের বিজয়া সম্মিলনীতে লগিনকে তৃণমূলের পক্ষ থেকে ‘সমাজসেবী’ বলে উল্লেখ করে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। সোমবার জেলার ডেপুটি পুলিশ সুপার বিক্রম প্রসাদ বলেন, ‘‘গত জুলাইয়ে হিলি থানার চকবলরামপুরে সংঘর্ষ এবং নাবালিকা অপহরণের অভিযোগের দু’টি মামলায় লগিন ফেরার ছিলেন। তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’
এ দিন লগিনের গ্রেফতারের খবরের পরে তৃণমূলের বিজয়া সম্মিলনীতে সংবর্ধনার ভিডিয়ো (সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার) সমাজমাধ্যমে ছড়াতেই রাজনৈতিক চাপান-উতোর শুরু হয়। বিজেপির জেলা সভাপতি স্বরূপ চৌধুরী বলেন, ‘‘পাঁচ বছর কারাদণ্ডের পরেও যার বিরুদ্ধে আরও অপরাধের মামলা রয়েছে, তাকে মঞ্চে তুলে সমাজসেবী বলে সংবর্ধনা দেওয়া হচ্ছে। তৃণমূল দুষ্কৃতী ও সমাজবিরোধীদের দলে পরিণত হয়েছে। এই ঘটনায় তা আবারও প্রমাণিত হল।’’
মন্ত্রী বিপ্লব মিত্রকে ফোন করা হলেও পাওয়া যায়নি, উত্তর মেলেনি মেসেজের। দলের অন্দরে বিপ্লব-বিরোধী শিবিরের নেতা মৃণাল সরকার বলেছেন, ‘‘দীর্ঘদিন জেলে থাকা কাউকে মঞ্চে তুলে সংবর্ধনা দেওয়া মোটেই ঠিক হয়নি। দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে।’’ তৃণমূল জেলা সভাপতি সুভাষ ভাওয়ালের বক্তব্য, ‘‘পুরনো মামলায় জামিন না নেওয়াতেই লগিনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে এর সঙ্গে সংবর্ধনার যোগ নেই।’’ তাঁর অভিযোগ, দলের মধ্যে ব্যক্তিগত সংঘাত নিয়ে আসা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ‘‘(দলীয় ভাবমূর্তি) খারাপের আর কী আছে! বালুরঘাটে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে দলের! আমরা ভোট পাই না!’’
লগিনকে এ দিন বালুরঘাটের সিজেএম আদালতে হাজির করানো হলে তাঁর আইনজীবী অরিন্দম চট্টোপাধ্যায় জামিনের আবেদন করেন। সরকারি আইনজীবী জয়ন্ত মজুমদার বলন, ‘‘বিচারক জামিন নাকচ করে আগামী ৮ নভেম্বর পর্যন্ত ধৃতের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।’’