২০১৩ সালে বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থা সারদার আর্থিক কেলেঙ্কারি সামনে এসেছিল। তারপর রোজ় ভ্যালি-সহ একাধিক সংস্থার বিরুদ্ধেও ভুরিভুরি অভিযোগ জমা পড়ে। সেই মামলা সিবিআইয়ের হাতে গেলেও ২০১৬ সালে রাজ্য সরকার পৃথক আর্থিক অপরাধ দমন বিভাগ তৈরি করে। বর্তমানে ওই সংস্থার হাতে ৯৭টি মামলা আছে। যার মধ্যে ৭৬টি মামলার চার্জশিট জমা পড়েছে বলে খবর।
প্রশাসনের খবর, গত ৮ বছর আর্থিক অপরাধ দমন বিভাগ মূলত অর্থলগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধেই তদন্ত করত। কিন্তু প্রশাসনের শীর্ষ মহল চেয়েছিল যে হাওয়ালা অথবা বড় ধরনের আর্থিক প্রতারণার তদন্ত এই শাখার অফিসারেরা করুক। সেই মতোই বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিল। রাজ্যের এক শীর্ষ পুলিশকর্তা জানান, আর্থিক দিক থেকে প্রতারিত হলে কোনও ব্যক্তি সরাসরি আর্থিক অপরাধ দমন শাখায় অভিযোগ জানাতে পারবেন। প্রথমে সেই অভিযোগের ব্যাপারে অনুসন্ধান করা হবে এবং যদি অনুসন্ধানে দেখা যায় যে মামলা রুজু করার ক্ষেত্রে যথেষ্ট উপাদান আছে, তা হলে থানায় মামলা রুজু করে তদন্তে নামবেন এই শাখার গোয়েন্দারা।
কোন ধরনের মামলার তদন্ত এই শাখা করবে, তারও কিছু বিধি তৈরি করা হয়েছে বলে খবর। গোয়েন্দা সূত্রের দাবি, কল সেন্টারের প্রতারণার মামলা সরাসরি এই শাখা হাতে নেবে না। কারণ, তার সঙ্গে সাইবার অপরাধ জড়িত। তবে যদি দেখা যায় যে কল সেন্টারের প্রতারণায় হাওয়ালা লেনদেনের যোগ আছে, তা হলে এই শাখা তদন্তভার হাতে নেবে। সরাসরি কোনও থানায় মামলা রুজু হলেও তার গুরুত্ব যদি বেশি হয় তা হলেও আর্থিক অপরাধ দমন শাখা তদন্তভার হাতে নিতে পারে।
আর্থিক প্রতারণার মামলার ক্ষেত্রে পৃথক শাখার প্রয়োজন হল কেন, তার ব্যাখ্যাও পুলিশকর্তারা দিয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, বিভিন্ন থানায় এমনিতেই মামলার পাহাড় জমে থাকে। তার সঙ্গে আর্থিক প্রতারণা মামলার তদন্ত গুরুত্ব দিয়ে বিভিন্ন থানা দেখে না বলেও অভিযোগ ওঠে। তবে এ কথাও ঠিক যে আর্থিক প্রতারণার তদন্তের মতো জটিল বিষয়ের তদন্ত সামলানোর পরিকাঠামো এবং লোকবলও থানার হাতে থাকে না। তার ফলে প্রতারিতদের সমস্যার সুরাহা হয় না। তাই ভুক্তভোগীকে সুরাহা দিতেই এই পদক্ষেপ।