মাসকয়েক আগে শহরের বিভিন্ন এলাকায় বেআইনি বাড়ি ভাঙতে গিয়ে পুরসভার কর্মীদের নানা ভাবে হেনস্থার শিকার হতে হয়। মাস চারেক আগে দক্ষিণ কলকাতার চারু মার্কেট থানা এলাকায় বেআইনি বাড়ি ভাঙতে গেলে পুরকর্মীদের দিকে বন্দুক তাক করে হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এক মহিলা পুর ইঞ্জিনিয়ারকে ঘিরে ধরে হেনস্থাও করা হয়। বেহালায় একটি বেআইনি বাড়ি ভাঙতে গেলে পুরকর্মীদের ঘরে ঢুকিয়ে বাইরে থেকে তালা মেরে দেওয়া হয়। শেষে পুলিশ গিয়ে কোনও মতে তাঁদের উদ্ধার করে নিয়ে যায়। মাস পাঁচেক আগে এন্টালিতে পাঁচতলা আবাসনের বেআইনি উপরের তল ভাঙতে গিয়ে মহিলাদের প্রবল বিক্ষোভ ও হেনস্থার মুখে পড়েন পুরকর্মীরা। গত অগস্টে পুরসভার ১২২ নম্বর ওয়ার্ডে একটি বেআইনি বাড়িতে নোটিস টাঙাতে গেলেও স্থানীয় বাসিন্দারা ঘেরাও করেন পুরসভার বিল্ডিং দফতরের ইঞ্জিনিয়ারকে। তাঁকে ঘিরে ধরে রীতিমতো হেনস্থা করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। চাঞ্চল্যকর বিষয় হল, পুজোর ছুটির পরে পুরসভা খুলতেই ওই ইঞ্জিনিয়ারের বিরুদ্ধেই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। অভিযোগ, ওই ইঞ্জিনিয়ারই নাকি এক মহিলাকে হেনস্থা করেছিলেন। পুরসভার বিল্ডিং দফতরের আধিকারিকেরা বলছেন, ‘‘বেআইনি বাড়ি ভাঙতে গেলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মহিলা পুলিশ পাওয়া যায় না। সেই সুযোগেই উল্টে পুরকর্মীরা অযথা হেনস্থার শিকার হচ্ছেন।’’
ওই দফতরের আর এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘পুরসভা বেআইনি বাড়ি ভাঙতে যাওয়ার সময়ে সঙ্গে মহিলা পুলিশ না থাকার সুযোগে বেআইনি বাড়িটি মহিলারা দখল করে নিচ্ছেন। তার পরে উল্টে তাঁরাই পুরসভার কর্মীদের উপরে চড়াও হচ্ছেন। পুরসভার তরফে জোরালো কোনও ব্যবস্থা নিতে গেলে পুরকর্মীদের বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ আনা হচ্ছে। ফলে বেআইনি বাড়ি ভাঙতে গিয়ে বড় রকমের ফাঁপরে পড়ছেন পুরসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মী-ইঞ্জিনিয়ারেরা।’’
পুরসভা সূত্রের খবর, এ দিন বৈঠকে নানা হেনস্থার কথা নগরপালের কাছে তুলে ধরা হয়। মেয়র তাঁর কাছে আবেদন করেন, শুধু বেআইনি বাড়ি ভাঙার কাজে সাহায্য করতেই কলকাতা পুলিশের বিশেষ বাহিনী গঠন করা হোক। তাতে যেন পর্যাপ্ত মহিলা পুলিশকর্মী থাকেন। পুরসভা সূত্রের খবর, পুজোর ছুটির জন্য বর্তমানে বেআইনি বাড়ি ভাঙার কাজ বন্ধ আছে। তবে, কালীপুজোর পরেই পুরসভার বিল্ডিং বিভাগ প্রায় ৫০টি বেআইনি বাড়ি ভাঙার কাজ শুরু করবে। তাই মেয়রের প্রস্তাব, বেআইনি বাড়ি ভাঙার কাজে কলকাতা পুলিশের ওই বিশেষ দল দ্রুত গঠন করা হোক।