দমদম বিমানবন্দরের ডিরেক্টর পর্বতরঞ্জন বেউরিয়া জানিয়েছেন, বিষয়টি প্রথম নজরে এসেছিল সোমবার দুপুর পৌনে তিনটে নাগাদ। সমাজমাধ্যমে একটি অ্যাকাউন্ট থেকে হুমকি তথ্য ছড়ানো হয়েছিল। বলা হয়েছিল, কলকাতা বিমানবন্দরের সঙ্গে সম্পর্কিত সাতটি বিমানে বোমা রাখা আছে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ওই সাতটি বিমানের মধ্যে পাঁচটি ছিল ইন্ডিগো উড়ান সংস্থার। বাকি দু’টি ভিস্তারার। ঘটনার পর সঙ্গে সঙ্গে বিমানবন্দরের দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তাকর্মীদের সতর্ক করে দেওয়া হয়েছিল। যদিও পরে কোনও বিমান থেকেই এই ধরনের কিছু পাওয়া যায়নি। পুরোটাই ভুয়ো তথ্য ছড়ানো হয়েছিল।
ওই সমাজমাধ্যম ব্যবহারকারীর প্রোফাইলের নাম ছিল ‘আই ওয়ান্না স্লিট ইওর থ্রোট’। অদ্ভুত এই প্রোফাইল নামের বাংলা তর্জমা করলে হয়, ‘আমি আপনার গলা কাটতে চাই’!
সমাজমাধ্যমে বোমাতঙ্ক ছড়াতেই তড়িঘড়ি পদক্ষেপ করে বিমানবন্দরের ‘বম্ব থ্রেট অ্যাসেসমেন্ট কমিটি’। এই কমিটির সভাপতি পদে রয়েছেন দমদম বিমানবন্দরের ডিরেক্টরই। জরুরি বৈঠক ডাকা হয় কমিটির। ওই বৈঠকের পর বোমার হুমকিকে ‘অনির্দিষ্ট’ তালিকাভুক্ত করা হয়। তবে কোনও ঝুঁকি এড়াতে নিয়ম অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করে। যাত্রীরা যাতে কেউ আতঙ্কিত না হয়ে পড়েন, সে দিকেই নজর ছিল বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের।
এই নিয়ে গত ১৫ দিনে দেশব্যাপী ৪০০টিরও বেশি বিমানে বোমাতঙ্ক ছড়াল। অন্তর্দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক উভয় ধরনের বিমান পরিষেবার ক্ষেত্রেই বোমা রাখার ভুয়ো খবর ছড়িয়েছে। যার জেরে সম্প্রতি একাধিক উড়ান পরিষেবা বিঘ্নিত হয়েছে। কোনওটি দেরিতে রওনা দিয়েছে। কোনওটির যাত্রাপথ বদল করে অন্য কোথাও জরুরি অবতরণ করাতে হয়েছে।
ভুয়ো খবর ছড়ানোর ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের ভাবনা চিন্তাও করছে কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রী কে রামমোহন নাইডু গত সপ্তাহে জানিয়েছেন, বোমা রাখার ভুয়ো তথ্য ছড়ানোয় জড়িতদের বিমানে ওঠা পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়ার পরিকল্পনা চলছে। অসামরিক বিমান পরিবহণ সংক্রান্ত দু’টি আইনে প্রয়োজনীয় সংশোধন আনারও ভাবনাচিন্তা চলছে কেন্দ্রের। মন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, ভুয়ো তথ্য ছড়িয়ে কেউ ধরা পড়লে, তাঁর বিরুদ্ধে কড়া শাস্তি এবং জরিমানার কথাও ভাবা হচ্ছে। শীঘ্রই এ বিষয়ে সরকারি ভাবে সিদ্ধান্ত জানানো হবে বলেও জানিয়েছেন অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রী।