জলপাইগুড়িতে গাছের মগডালে উঠে গর্জন চিতাবাঘের, বন্ধ হয়ে গেল চা–বাগানের কাজ
হিন্দুস্তান টাইমস | ২৯ অক্টোবর ২০২৪
উৎসবের মরশুমে চা–বাগানের কাজ বন্ধ। না, মালিকপক্ষ চা–বাগান বন্ধ করেনি। ডুয়ার্সের এই চা–বাগানের কাজ বন্ধ হয়েছে চিতাবাঘের হানা দেওয়ার জন্য। আর এই ঘটনা সামনে আসার পর থেকে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে গোটা এলাকায়। দিনভর এখন ডুয়ার্স জুড়ে চা–বাগানে চিতাবাঘের হানাই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে। শুধু তাই নয়, এই চিতাবাঘ নিয়ে নানা গুজবও ছড়িয়ে পড়েছে। তবে চা–বাগানের শ্রমিকরা গাছের মগডালে চিতাবাঘকে ঝুলে থাকতে দেখেছে। তারপর থেকেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
এই ঘটনা এখন বন দফতর পর্যন্ত গড়িয়েছে। সোমবার সকালে ডুয়ার্সের ওদলাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের মানাবাড়ি চা–বাগানের ১৪ নম্বর সেকশনে এই ঘটনা ঘটেছে। একটি ছায়াদানি গাছের মগডালে চিতাবাঘ উঠে যায়। আর সেখান থেকে গর্জন করতে থাকে। তারপর সেখানে ঝুলে থাকতে দেখেন চা–বাগানের শ্রমিকরা। আতঙ্কে তাঁরা চিৎকার করলে পাল্টা গাছের উপর থেকে গর্জন করতে থাকে ওই চিতাবাঘ। আর তা দেখতে ঘটনাস্থলে ভিড় জমান মানুষজন। এই কারণে চা–বাগানের কাজকর্ম শিকেয় ওঠে মানাবাড়িতে। এই বিষয়ে চা–বাগানের শ্রমিক রিনা মুন্ডা বলেন, ‘হঠাৎ করে গাছ থেকে বাঘের গর্জন শুনতে পাই। উপরে চোখ তুলতেই গাছের ডালে চিতাবাঘকে ঝুলে থাকতে দেখতে পাই।’
এই ঘটনার কথা চাউর হতেই মালবাজার বন্যপ্রাণ স্কোয়াডের বনকর্মীরা ও মালবাজার থানার পুলিশ সেখানে আসেন। চিতাবাঘকে পাকড়াও করতে গাছের নীচে বড় নেট পাতা হয়। কিন্তু মগডাল থেকে নামেনি সে। এই বিষয়ে পরিবেশকর্মী শ্যামাপ্রসাদ পান্ডে বলেছেন, ‘চিতাবাঘের স্বভাব সে নিরাপদ মনে করলে তবেই নেমে আসবে।’ এদিন সন্ধ্যায় সবাইকে স্বস্তি দিয়ে চিতাবাঘ গাছ থেকে নেমে জঙ্গলে ঢুকে পড়ে। জলপাইগুড়ি বন্যপ্রাণী বিভাগের জেলা বন বিভাগের আধিকারিক দ্বিজপ্রতিম সেনের বক্তব্য, ‘চা– বাগানের গাছের মগডালে চিতাবাঘ দেখতে পেয়ে শ্রমিকরা খবর দেন। বনকর্মীরা সেখানে বাসিন্দাদের সরিয়ে পাহারায় দেন। নীচে জাল পাতা ছিল। তবে সন্ধ্যায় চিতাবাঘ গাছ থেকে নেমে জঙ্গলে চলে যায়।’
একদিন আগেই দক্ষিণ দিনাজপুর থেকে একটি চিতাবাঘকে ধরে খাঁচায় বন্দি করা হয়েছিল। আবার এখন জলপাইগুড়িতে এই আতঙ্ক দেখা গিয়েছে। এই ঘটনার পাশাপাশি টুনবাড়ি চা–বাগানের প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার রাস্তায় সোমবার সকালে বড় সাইজের এক চিতাবাঘকে রাস্তা পার করতে দেখেন স্থানীয় গ্রামবাসীরা। আর বন দফতরের পক্ষ থেকে দু’টি ট্রাপ ক্যামেরা টুনবাড়ি চা–বাগানে লাগিয়ে দেওয়া হলে গোটা বিষয়টি ধরা পড়ে যায়। জেলা বন বিভাগের আধিকারিকের কথায়, ‘প্রতিটি চিতাবাঘের উপর আমরা নজর রাখছি। আর রেঞ্জকে সতর্ক করা হয়েছে।’