• কালীপুজোয় একবারই দেবীর রাজবেশ, সেই রাতে তিনি এলোকেশী, ঘুরে আসুন হংসেশ্বরী মন্দির
    হিন্দুস্তান টাইমস | ২৯ অক্টোবর ২০২৪
  • হংসেশ্বরী মন্দির। বাঁশবেড়িয়ার এই মন্দিরকে ঘিরে ছড়িয়ে রয়েছে নানা কাহিনি। দেশ বিদেশের অগণিত ভক্ত আজও ছুটে আসেন এই মন্দিরে। অপূর্ব এই মন্দিরের গঠনশৈলী। কালীপুজোতে এবার কী কী ব্যবস্থা থাকছে বাংলার প্রাচীন এই মন্দিরে তারই খোঁজ নিল হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা।

    রাজা নৃসিংহদেব ১৭৯৯ খ্রীষ্টাব্দে এই মন্দিরটির নির্মাণকাজ শুরু করেছিলেন। কিন্তু ১৮০২ সালে তাঁর মৃত্যুর জেরে এই মন্দিরটির নির্মাণ অসমাপ্ত হয়ে গিয়েছিল। এরপর তাঁর বিধবা পত্নী রানি শঙ্করী ১৮১৪ সালে এই মন্দিরের নির্মাণকাজ শেষ করেন। ভারতীয় পুরাতত্ত্ব বিভাগ এই মন্দিরের দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে। তাদের মতে এই মন্দিরের কিছু অংশ ইঁট আর কিছু অংশ পাথর দিয়ে তৈরি। এই রত্ন মন্দিরটি ত্রয়োদশ রত্ন পাঁচতলা মন্দিরের চারদিকে সজ্জিত আছে। এই রত্নগুলি প্রচলিত খাঁজের পরিবর্তে পদ্ম পাপড়ির মতো দেখতে। কাঠের তৈরি এখানকার মূর্তি। নাভি থেকে নির্গত পদ্মের উপর দেবী বসে রয়েছেন। এই মন্দিরটিতে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ সৌধ হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। পোড়ামাটির ভাস্কর্য মন্দিরটিকে আরও সুন্দর করে তুলেছে।

    মঙ্গলবার সকালবেলা। খোলা হল গর্ভগৃহের দরজা। তার আগে থেকেই ভক্তরা অপেক্ষা করছেন ফুল নিয়ে। একটু দূরেই গঙ্গা। তবে কথিত আছে গঙ্গা নাকি একটা সময় আরও কাছে ছিল। তবে সেদিনের বাঁশবেড়িয়ার সঙ্গে আজকের বাঁশবেড়িয়ার অনেক ফারাক। মাঝে গঙ্গা দিয়ে বয়ে গিয়েছে অনেক জল। চলে গিয়েছে বহু বছর। তবুও আজও দেবী হংসেশ্বরীর টানে ছুটে আসেন ভক্তরা।

    পুরোহিত বসন্ত কুমার চট্টোপাধ্যায় বলেন, হংসেশ্বরী মন্দিরের মূর্তি হচ্ছে কালীমূর্তি। হংসেশ্বরী কালী। আত্মা ও জ্ঞানের যিনি ঈশ্বরী তিনি হংসেশ্বরী। বছরের অন্যান্যদিন তিনি শান্তমূর্তি। তবে দীপান্বিতা কালীপুজোর দিন তিনি এলোকেশী মূর্তি। সন্ধ্যা আরতির পর মাকে রাজবেশ পরানো হবে। বস্ত্র থাকে না। সারা অঙ্গ ফুল মালা দিয়ে ঢাকা থাকে। ভোর চারটের সময় পুজো মিটে যাবে। এরপর রাজবেশের জায়গায় বস্ত্রধারণ করা হয়। পঞ্চমুন্ডির আসনে দেবী। মহাকালের হৃদয় থেকে দেবী উদ্ভাসিত। এই কাঠ ভেসে এসেছিল। রাজানৃসিংহদেব রায় এই মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা। স্বপ্নাদেশে মাকে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। পাশেই অনন্ত বাসুদেবের মন্দির।

    এনিয়ে নানাজনে নানা কথা বলেন। তবে পুরোহিত জানিয়েছেন, এর কোনও প্রামাণ্য কিছু আমরা পাইনি।

    সকাল ৭টা থেকে দুপুর ১২টা ৩০ মিনিট ও বিকাল ৪টে থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত মন্দির খোলা থাকে।

    ত্রিবেণী, বাঁশবেড়িয়া স্টেশনে নেমে টোটোতে বা অটোতে যেতে পারেন।

    রাত সাড়ে ৭টায় পুজো শুরু হবে। পুষ্পাঞ্জলি রাত ১০টায়। সাড়ে ১০টায় ভোগ নিবেদন। রাত ১১টায় ভোগ বিতরণ। রাত ১১টায় লাইনে দাঁড়িয়ে ভোগ নিতে হবে।
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)