হাতে আর দু’দিন। তারপরই কালীপুজো নিয়ে মেতে উঠবে গোটা বাংলা। ইতিমধ্যেই বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কালীপুজোর উদ্বোধন করতে শুরু করেছেন। তার সঙ্গে সতর্ক করেছেন শব্দবাজি না ব্যবহার করতে। সবুজ বাজির উপর বেশি জোর দিতে। আবার ২০২৩ সালে শব্দবাজির শব্দসীমা বাড়িয়ে ৯০ থেকে ১২৫ ডেসিবেল করা হয়েছিল। এই শব্দসীমায় সবরকমের বাজিই পাশ করে যাবে বলে মনে করেন পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা। এই আবহে যাতে শহরের বাজি বাজারগুলিতে নিষিদ্ধ শব্দবাজি ঢুকতে না পারে তার জন্য কড়াকড়ি শুরু হয়েছে। গত সপ্তাহ থেকেই জোরদার নজরদারি করছে পুলিশ।
কিন্তু তারপরও নিষিদ্ধ শব্দবাজি বিক্রি হচ্ছে বলে অভিযোগ। সবুজ বাজি সামনে রেখে আড়ালে বিক্রি হচ্ছে দেদার নিষিদ্ধ শব্দবাজি। নুঙ্গি এবং চম্পাহাটির হারাল এলাকায় এই কাজ চলছে জোরকদমে। সেখান থেকে নিষিদ্ধ শব্দবাজি ছড়িয়ে পড়ছে গোটা বাংলায়। আর তার প্রমাণ মিলেছে গত একসপ্তাহে। পুলিশ গত একসপ্তাহে বাজেয়াপ্ত করেছে ১৭১৪ কেজি নিষিদ্ধ শব্দবাজি। আর পুলিশ সূত্রে খবর, এই কারণে গ্রেফতার করা হয়েছে এখনও পর্যন্ত ১৭ জনকে। পরিবেশকর্মীদের বক্তব্য, কালীপুজোর একসপ্তাহ আগে থেকে নজরদারি চালালে নিষিদ্ধ শব্দবাজি রোখা যাবে না। কারণ, অগস্ট মাসের শেষ থেকেই শহরে নিষিদ্ধ শব্দবাজি প্রবেশ করে।
এই নিষিদ্ধ শব্দবাজি পাচার করতে গিয়েও পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে অনেকে। শহরে নিষিদ্ধ শব্দবাজি ঢোকে দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং তামিলনাড়ুর শিবকাশী থেকে। তবে এখন থেকেই কলকাতায় এবং সংলগ্ন এলাকায় নিষিদ্ধ শব্দবাজি ফাটতে শুরু করেছে। অথচ কাউকে ধরা যায়নি। তার উপর বাড়তি মুনাফা করতে রাতের দিকে নিষিদ্ধ শব্দবাজি ঢুকছে শহরে বলে অভিযোগ। এই খবর চাউর হওয়ার পর গত সপ্তাহ থেকে ১৮টি জায়গায় পুলিশ পিকেট বসেছে। দুই শিফটে পুলিশকর্মীরা ওই পিকেটে ডিউটি করতে শুরু করেছেন। প্রত্যেক পুলিশ পিকেটে একজন অফিসারের নেতৃত্বে তিনজন পুলিশকর্মী থাকছেন।
এই নিষিদ্ধ শব্দবাজি পাচার রুখতে কলকাতা, হাওড়া এবং শিয়ালদা স্টেশনের বাইরে বিশেষ নজরদারি করার ব্যবস্থা রয়েছে। বাসন্তী হাইওয়ে থেকে শুরু করে ডায়মন্ড হারবার রোড, বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে, ইএম বাইপাসের ঢালাই ব্রিজে কড়া নজরদারির ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। এইসব জায়গা দিয়েই নিষিদ্ধ বাজি প্রবেশ করে। এই বিষয়ে কলকাতা পুলিশের এক অফিসার বলেন, ‘যেসব রাস্তা দিয়ে শহরে নিষিদ্ধ শব্দবাজি ঢোকে, সেখানে চেকিং বাড়ানো হয়েছে। আর বড় যেসব বাজার রয়েছে সেখানে আমরা নজরদারি চালাচ্ছি।’