• ভারতে ঢুকে ফসল নষ্ট বাংলাদেশিদের, ক্ষোভ
    বর্তমান | ৩০ অক্টোবর ২০২৪
  • তামিম ইসলাম, ডোমকল: জিরো পয়েন্ট ছেড়ে অনেকটা ভেতরে ভারতীয় ভূখণ্ডে টহল দিচ্ছে বিএসএফ। অভিযোগ, সেই সুযোগে সীমান্তের অরক্ষিত ভারতীয় জমিতে আনাগোনা বাড়ছে বাংলাদেশিদের। রানিনগরের বামনাবাদ সীমান্তের কৃষকদের আরও অভিযোগ, সীমান্তের ভারতীয় জমির ফসল পর্যন্ত নষ্ট করে দিচ্ছে বাংলাদেশি দুষ্কৃতীরা। এদিকে বিএসএফের কড়াকড়িতে অবাধে নিজের জমিতে যেতে পারেন না এপারের কৃষকরা। দিনের পর দিন এভাবে বিএসএফের কড়াকড়ি ও বাংলাদেশি দুষ্কৃতীদের দাপাদাপিতে অতিষ্ঠ হয়ে মঙ্গলবার সকালে প্রতিবাদে সামিল হলেন রানিনগর ২ ও জলঙ্গি ব্লকের বামনাবাদ ও তার আশেপাশের কৃষক ও মৎসজীবিরা। এদিন সকালে বামনাবাদ ঘাটে একজোট হয়ে তাঁরা প্রতিবাদ দেখান। প্রতিবাদে শামিল হয়ে কৃষক ও মৎসজীবীরা এদিন বিএসএফের ওপি পয়েন্ট পেরিয়ে সীমান্তের জমিতে চাষ কিংবা পদ্মার নালায় মাছ ধরতে যায়নি। ঘণ্টা কয়েক ধরে চলে তাঁদের এই 'নীরব প্রতিবাদ'। কৃষকদের হুঁশিয়ারি, সমস্যার সমাধান না হলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামবেন তাঁরা।

    প্রসঙ্গত, এক সময়ে পদ্মা ভাঙনে সীমান্ত থেকে সরে এসেছিল বিএসএফ। নদী ফের খাত বদলে সরে গেলেও জিরো পয়েন্টে সরে যায়নি বিএসএফ। কৃষকদের দাবি,  জিরো পয়েন্ট থেকে অনেকটা ভিতরে ওপি পয়েন্ট থেকেই সীমান্তে নজরদারি চালান জওয়ানরা। ওপি পয়েন্টে প্রতিদিন পরিচয়পত্র জমা দিয়ে হাজারো তল্লাশির শেষে কৃষি জমিতে চাষ করতে যান কৃষকরা। আবার ফিরে আসতে হয় বেলা তিনটে বাজার আগেই। তাঁদের অভিযোগ, ফেন্সিংহীন সীমান্তে বিএসএফ না থাকার সুযোগে তাঁদের জমিতে দাপিয়ে বেড়ায় বাংলাদেশি দুষ্কৃতীরা। বিকেল বেলা জমি থেকে ফিরতেই তাঁদের জমিতে গোরুর পাল নিয়ে হানা দেয় বাংলাদেশি রাখালরা। তাঁদের অভিযোগ, টহলদারি নিয়ে বিএসএফের উদাসীনতার জন্যই বাংলাদেশিরা এই সাহস পাচ্ছে। এমনকী বিএসএফের কড়াকড়িতে ওই এলাকায় পদ্মার ভারতীয় অংশে মৎস্যজীবীদের মাছ ধরাও বন্ধ হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ তাঁদের। তাঁদের দাবি, বিএসএফ জিরো পয়েন্টে গেলে এই সমস্যা হবে না। এতে যেমন একধারে নিজের জমিতে অবাধে কৃষিকাজ করতে পারবেন তাঁরা। তেমনই তাঁদের জমিতে বাংলাদেশি দুষ্কৃতীদের অত্যাচার বন্ধ হবে। জয়কুমার সরকার নামের এক কৃষক বলেন, কয়েক বছর থেকে বাংলাদেশি দুষ্কৃতীরা গোরু-মোষ নিয়ে এনে বর্ডারে আমাদের খুব অত্যাচার করে। কেউ বাধা দিলে উল্টে তাঁরই মাথা ফাটিয়ে ভারতে পাঠিয়ে দেয় ওপারের লোকেরা। অথচ ভারতের জওয়ানরা চোখ তুলেও তাকায় না। আর এন্ট্রি করার সময় আমাদের শরীরে পর্যন্ত তল্লাশি করে। অথচ বর্ডারের দিকে যায় না ওরা। ওই কারণেই আমরা আজকে প্রতিবাদ করছি। আমরা চাই বর্ডারে বিএসএফ চলে যাক। যাতে করে আমাদের ফসল সুরক্ষিত থাকে।

    সাহেবনগর পঞ্চায়েত প্রধান মজিবর রহমান বিশ্বাস বলেন, বিএসএফ ভারতীয় কৃষকদের সঙ্গে বাংলাদেশিদের মতো ব্যবহার করে। যত কড়াকড়ি সব তাঁদের বেলাতেই। অথচ ওপারের দুষ্কৃতীরা কৃষকদের ফসল নষ্ট করে দিলেও বিএসএফ কিছুই করে না। ওরা যাতে জিরো পয়েন্টে যায় তার জন্য পঞ্চায়েতের তরফে থেকে আমরা ওপি পয়েন্টও করে দিয়েছিলাম। যদিও বিএসএফ সেখানে যায়নি। এভাবে চলতে পারে না। সমস্যার সুরাহা না হলে বৃহত্তর ভাবে পথে নামব।

    যদিও বিএসএফের এক আধিকারিক বলেন, নদী-নালার জন্য বর্ষাকালে একটা সমস্যা তৈরি হয় ঠিকই। তবে আমাদের টহল চলে। শুখা মরশুমে একেবারে সীমান্ত ঘেঁষে আমাদের জওয়ানরা টহল দেন। তবে জল বাড়লে কিছুটা সমস্যা হয়।
  • Link to this news (বর্তমান)