বাঁকাদহের জঙ্গলে শাবকের জন্ম, ফিরে যাওয়ার পথে হাতির পাল
বর্তমান | ৩০ অক্টোবর ২০২৪
সংবাদদাতা, বিষ্ণুপুর: বাঁকুড়ার সোনামুখীর জঙ্গলে যাচ্ছিল হাতির পাল। কিন্তু পথে বাঁকাদহের জঙ্গলে জন্ম হল একটি ফুটফুটে হস্তিশাবকের। বনকর্মীরা দূর শাবকটির নাম রেখেছেন ‘চামেলি’। ছোট্ট চামেলিকে নিয়ে দ্বারকেশ্বর নদ পেরনোর ঝুঁকি নেয়নি হাতিরা। তাই বাঁকুড়া ছেড়ে পশ্চিম মেদিনীপুরের দিকে ফিরতি পথ ধরল তারা। বিষ্ণুপুর পাঞ্চেত ডিভিশনের আধিকারিকরা মনে করছেন, শাবকটি সাবলীলভাবে চলাফেরা করতে পারলেই হাতির পালটির বাঁকুড়ায় ফেরার সম্ভাবনা প্রবল।
বিষ্ণুপুর-পাঞ্চেতের এডিএফও বীরেনকুমার শর্মা বলেন, এদিন আমাদের ডিভিশন থেকে সমস্ত হাতি চলে গিয়েছে। তবে হস্তিশাবকের জন্মের পর ২৪টি হাতির দল বাঁকুড়া সীমানায় পশ্চিম মেদিনীপুরের জঙ্গলে রয়েছে। বনকর্মীরা ওই দলটির উপর নজর রেখেছেন।
কয়েকদিন ধরে ৩২টি হাতি দু’টি দলে ভাগ হয়ে বাঁকাদহ, বিষ্ণুপুর ও জয়পুর রেঞ্জে দাপিয়ে বেড়াচ্ছিল। তবে সোমবার আটটি হাতির একটি দল দ্বারকেশ্বর নদ পেরিয়ে বাঁকুড়া উত্তর ডিভিশনের সোনামুখীতে চলে যায়। বাকি ২৪টি হাতির দলও সোনামুখীর দিকেই যাচ্ছিল। কিন্তু ওইদিন বিকেলে বাঁকাদহ রেঞ্জের চিলিংবাঁধ এলাকার জঙ্গলে একটি হস্তিশাবকের জন্ম হয়। চিলিংবাঁধে জন্ম হওয়ায় বনকর্মীরা শাবকটির নাম রাখেন চামেলি। মা ও সদ্যোজাত শাবককে হাতির দলটি দীর্ঘক্ষণ ঘিরে রাখে। সন্ধ্যার দিকে হাতির দলটি হঠাৎ পিছন দিকে যেতে শুরু করে। রাতের মধ্যে বাঁকুড়া ছেড়ে পশ্চিম মেদিনীপুরের রূপনারায়ণ ডিভিশনের খড়িকাশুলির জঙ্গলে ওই সমস্ত হাতি আশ্রয় নেয়।
দলমার বুনো হাতিরা প্রায় ২৫বছর ধরে নির্দিষ্ট করিডোর দিয়ে বাঁকুড়া জেলায় যাতায়াত করে। হাতিরা এমন একটি করিডোর বেছে নিয়েছে, যার মাঝে মাঝে কিছু লোকালয় রয়েছে। বাকি অন্তত ১০০কিলোমিটারজুড়ে জঙ্গল আছে। মূলত খাবারের সন্ধানে বছরেরর বিভিন্ন মরশুমে হাতি এই করিডোর দিয়ে যাতায়াত করে। লোকালয়ে ক্ষয়ক্ষতি ঠেকাতে নালা কাটা, বৈদ্যুতিক তারের ফেন্সিং বসানো-নানাভাবে চেষ্টা করেও ওই করিডোরে হাতিদের যাতায়াত বন্ধ করা সম্ভব হয়নি।