স্বপ্নাদেশে মৃৎশিল্পীকে দিয়েই মা নিজের মূর্তি গড়িয়েছিলেন
বর্তমান | ৩০ অক্টোবর ২০২৪
সংবাদদাতা, বিষ্ণুপুর: স্বপ্নাদেশে মৃৎশিল্পীকে দিয়ে নিজের মূর্তি গড়িয়েছিলেন মা কালী। এমনই বিশ্বাসে বংশ পরম্পরায় সেই পরিবার থেকেই প্রতিমা তৈরি হয়। একইভাবে পুরোহিত থেকে ঢাকি, বাজনদার সবাই বংশ পরম্পরায় এই পুজোর সঙ্গে যুক্ত। পাত্রসায়রের খোসালপুরে সাড়ে তিনশো বছরের পুরনো পারিবারিক কালীপুজো ঘিরেই এলাকার মানুষ আনন্দে মাতে।
পরিবারের প্রবীণ সদস্য অসিত ঘোষ বলেন, আমাদের পূর্বপুরুষ কৃষ্ণকান্ত ও পরাণ ঘোষের বাস ছিল হুগলির সেনাই এলাকায়। বর্গী আক্রমণের সময় তাঁরা পাত্রসায়রের খোসালপুরে আশ্রয় নেন। ওইসময় স্থানীয় কালীবাঁধ পুকুরে স্বয়ং মা কালী পরাণ ঘোষের স্ত্রীকে দেখা দেন। তাঁকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য স্বপ্নাদেশ দেন। মন্দির প্রতিষ্ঠার সময় মূর্তি গড়ার কারিগর থেকে পুরোহিত, ঢাকি, ঝুমুর, কাঁসর, বাজনদারকে স্বয়ং মা কালী স্বপ্নাদেশ দিয়ে মণ্ডপে ডেকে এনেছিলেন। তাই তাঁদের আর পুজোর জন্য নিমন্ত্রণ করতে হয় না। বংশ পরম্পরায় প্রতি বছর তাঁরা পুজোয় নিজেদের দায়িত্ব পালন করেন। পরিবারের অপর সদস্য নীহাররঞ্জন ঘোষ বলেন, আমাদের মা কালী ভীষণ জাগ্রত। কথিত আছে মায়ের গয়না চুরি করতে এসে এক দুষ্কৃতীর চোখ নষ্ট হয়ে অন্ধ হয়ে গিয়েছিল। আমাদের পুজো পাঁচদিন ধরে চলে। পাঁঠা ও আখ বলি হয়। পুজো দেখতে আসা দর্শনার্থীদের না খাইয়ে ফেরানো হয় না। ওই পরিবারের সদস্য বুদ্ধদেব ঘোষ বলেন, গ্রামে দুর্গাপুজো না থাকায় কালীপুজোকে কেন্দ্র করে বাসিন্দারা পাঁচদিন ধরে উন্মাদনায় মেতে ওঠেন। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
পরিবারের বিশ্বাস, দুষ্কৃতীরা মন্দিরের পবিত্রতা নষ্ট করায় ক্ষিপ্ত মা কালী নরবলি পেয়ে শান্ত হয়েছিলেন। আগে নির্জন জায়গায় পুজো হতো। পরে ঘোষ বাড়ি সংলগ্ন কালীবাঁধ পুকুরের সামনে মন্দির স্থাপন করে দেবীকে পুনরায় প্রতিষ্ঠা করা হয়। তখন থেকে পুজো হয়ে আসছে। পুজোর দু’দিন আগে থেকেই নহবতের আসর বসে। খোসালপুরের ওই পুজো সদগোপবাড়ির পুজো বলে এলাকায় পরিচিত।