মনসুর হাবিবুল্লাহ, দিনহাটা: মুক্ত আকাশে উড়ে বেড়ায় পাখি। তা দেখে মানুষেরও মন উড়তে চায়। কিন্তু উড়তে আমাদের মানা। মন চাইলেও গৃহকোণে বন্দি হয়ে থাকতে হয় আমাদের। সমাজ, প্রকৃতি, অর্থনীতি সহ বিভিন্ন কারণ প্রতিবন্ধকতা হিসেবে থাকে। এবারের কালীপুজোয় ‘উড়তে মোদের মানা’ থিম করেছে চ্যাংরাবান্ধা বিবেকানন্দ স্পোর্টিং অ্যান্ড রিক্রিয়েশন ক্লাব। ৪৫ তম বছরে পদার্পণ করেছে তাদের পুজো। আলোক ঝলমলে উজ্জ্বল মণ্ডপে প্রাকৃতিক জিনিস দিয়ে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে মানুষের মনের কথা। থিম সজ্জায় শিল্পী অমল পাঁজা। প্রতিমা তৈরি করেছেন পুলক পাল।
মণ্ডপের সামনে সুউচ্চ মোবাইল টাওয়ার। সেখানে আটকে গিয়েছে বিশাল এক ম্যাকাও পাখি। মণ্ডপকে ছায়া দিয়ে রেখেছে বৃক্ষ। সেই বৃক্ষে আশ্রয় নিয়েছে একঝাঁক পাখি। সোনার খাঁচায় বন্দি হয়েছে অনেক পাখি। খাঁচা যতই সোনার হোক পাখিরা তো বন্দি। পাখিদের কিচিরমিচির শব্দে ভরে উঠবে মণ্ডপ প্রাঙ্গন। পাখি এখানে রূপক মাত্র। পাখির মতো মানুষের মনও বন্দি।
সেই দৃশ্য দেখাতে শিশুকে খাঁচায় বন্দি করে রাখা হয়েছে। মণ্ডপের দেওয়ালে মাটির খাঁচায় বন্দি আছে প্রচুর পাখি। তবে দেবী এখানে পাখা মেলে রয়েছেন। সমস্ত প্রতিবন্ধকতা দূর করে উৎসাহ দিচ্ছেন উড়তে। আমাদের সকলের স্বপ্ন যাতে পূরণ হয় সেই আশীর্বাদ করছেন তিনি।
মোবাইল টাওয়ারের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পাখিরা। টাওয়ারের বিকিরণে সঙ্কটে তারা। মোবাইল টাওয়ারের জন্য পরিবেশের আরও বিভিন্ন জিনিস ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সেই বার্তা দিতেই মোবাইল টাওয়ারে আটকে গিয়েছে ম্যাকাও। ছোটবেলা থেকেই আমরা স্বপ্ন দেখি কর্মজীবনে সফলতার। কারও ইচ্ছে ডাক্তার হওয়া, কারও ইঞ্জিনিয়ার। আরও অনেক স্বপ্ন দেখে শিশুরা। সামাজিক সমস্যা বা অর্থনৈতিক প্রতিকূলতা অন্তরায় হয়। সেই সমস্যাও তুলে ধরা হয়েছে।
শিল্পী অমল পাঁজা বলেন, স্বপ্নপূরণে বাধা হয় অনেক কিছুই। মোবাইল টাওয়ারে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে প্রকৃতি। পাখিরমতো উড়তে ইচ্ছে করে। কিন্তু উড়তে মোদের মানা। সেটাই তুলে ধরা হয়েছে। ক্লাব সম্পাদক সান্টু ঘোষ বলেন, কালীপুজো মানে চাংরাবান্ধা। আর এখানে অন্যতম সেরা আমাদের পুজো। এবারের থিম দর্শনার্থীদের নজর কাড়বে। পরিবেশ প্রেম আর মানুষের উড়ার অদম্য ইচ্ছে ভিড় টানবে দর্শনার্থীদের। নিজস্ব চিত্র।