নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: কোথাও এক ঘণ্টা। কোথাও আবার তারও বেশি সময় লাইনে দাঁড়িয়ে কালীপুজোর মণ্ডপে ঢুকতে হয় দর্শনার্থীদের। এবার সেসব অতীত। কোন মণ্ডপে কত ভিড়, তা আগে থেকেই ঠাহর করতে পারবেন দর্শনার্থীরা। সেই বুঝে প্যান্ডেল হপিং করতে পারবেন তাঁরা। এর যাবতীয় কৃতিত্ব বারাসত জেলা পুলিসের। তারা জায়ান্ট স্ক্রিনের মাধ্যমে ভিড়ের ছবি বিভিন্ন মোড়ে লাইভ টেলিকাস্ট করবে। সেই ছবিই বুঝিয়ে দেবে কোন মণ্ডপে আগে, আর কোন মণ্ডপে পরে যাবেন দর্শনার্থীরা। প্রাথমিকভাবে বারাসত ও মধ্যমগ্রামের ১০টি জায়গায় জায়ান্ট স্ক্রিন বসানোর পরিকল্পনা নিয়েছে পুলিস। এর ফলে দর্শনার্থীদের যেমন সুবিধা হবে, তেমনই মণ্ডপে মণ্ডপে ভিড় কিছুটা হলেও এড়ানো যাবে বলে মনে করছেন পুলিসের কর্তারা।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, বারাসত শহরে এবার মোট ১৫টি ও মধ্যমগ্রামের ন’টি বিগ বাজেটের পুজো হচ্ছে। রকমারি থিমে সেজে উঠেছে দুই শহর। প্রতি বছরই এই দুই শহরে লক্ষ লক্ষ মানুষের ভিড় হয়। ফলে, একটা সময় বিগ বাজেটের পুজো মণ্ডপে লাগামছাড়া ভিড় উপচে পড়ে। অথচ বেশ কিছু মণ্ডপ ফাঁকাই থেকে যায়। অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার অভিনব উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বারাসত জেলা পুলিস। তারা নিজেদের উদ্যোগে বড় পুজো মণ্ডপগুলিতে বসাচ্ছে ক্যামেরা। ক্যামেরার অবস্থান এমন হবে, যাতে গোটা মণ্ডপের ছবি তাতে ধরা পড়ে। সেই ছবি সরাসরি ফুটে উঠবে জায়ান্ট স্ক্রিনে। দর্শনার্থীরা ওই স্ক্রিনে চোখ রাখলেই বুঝতে পারবেন, কোন মণ্ডপ ফাঁকা, আর কোন মণ্ডপে ভিড়ের চাপ বেশি। বারাসতের চাঁপাডালি, ডাকবাংলো, কলোনি মোড় সহ পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় স্ক্রিনে দেখা যাবে সেই ছবি। মধ্যমগ্রাম চৌমাথায় দু’টি, দোলতলা, মাইকেল নগরেও এই ধরনের স্ক্রিন বসানোর কথা ভেবেছে পুলিস।
এ বিষয়ে বারাসত পুলিস জেলার অতিরিক্ত সুপার স্পর্শ নীলাঙ্গি বলেন, মূলত দর্শনার্থীদের সুবিধার জন্য আমরা জায়ান্ট স্ক্রিনের মাধ্যমে ভিড়ের লাইভ টেলিকাস্ট করব। তবে কতগুলি জায়গায় এমন স্ক্রিন বসানো হবে, তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। বারাসত ও মধ্যমগ্রামে এই ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। মণ্ডপে বসানো হবে উন্নতমানের ক্যামেরা। ড্রোন ক্যামেরাও ব্যবহার করা হতে পারে।
এদিকে, পুজোর ক’দিন কালীক্ষেত্র বারাসত ও মধ্যমগ্রামে ভিড় সামলে গাড়ির গতি স্বাভাবিক রাখাই চ্যালেঞ্জ বারাসত পুলিসের। একথা মাথায় রেখেই সোমবার বারাসত ও মধ্যমগ্রামের ২৪টি বড় বাজেটের পুজো কমিটির কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন পুলিস সুপার প্রতীক্ষা ঝাড়খড়িয়া। নিরাপত্তার কারণে সিসি ক্যামেরার নজরদারির পাশাপাশি রাতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েন করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। একইসঙ্গে জাতীয় সড়কে কোনও স্টল না করারও নির্দেশ দিয়েছেন পুলিস সুপার। তিনি বলেন, পুলিসের পিঙ্ক মোবাইল ভ্যান, উইনার্স টিম টহল দেবে। ভিড় অনুযায়ী জাতীয় সড়কে গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণ করবে পুলিস। ৪ নভেম্বরের মধ্যে প্রতিমা বিসর্জনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।