নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাকপুর: আলোর উৎসবে মেতে উঠতে তৈরি নৈহাটির বাসিন্দারা। শহরজুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে বিগ বাজেটের পুজো। তাই ৫ নভেম্বর পর্যন্ত ভোটের উত্তেজনাকে একপাশে সরিয়ে রেখে আলোর উৎসবেই মেতে উঠতে চান তাঁরা।
নৈহাটির অরবিন্দ রোডে বড়মার পুজোয় লক্ষাধিক ভক্ত সমাগম হয়। এবার বড়মার পুজোর ১০১ তম বছর। সেখানে কয়েক হাজার মানুষ দণ্ডি কাটেন, অঞ্জলি দেন। ১০১ ভরি সোনা ও ৪২ কেজি রুপো দিয়ে মাকে সাজানো হয়েছে। এছাড়াও অরবিন্দ রোডেই লাইন দিয়ে পরপর বড় কালীপুজো হয়। যেমন গাঁজা কালী, বেচা কালী, শ্যামা কালী, কদম কালী, হকার্স কালী, তারা মা পুজো ইত্যাদি। সব পুজোতেই শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে।
নৈহাটির ৬ নম্বর বিজয়নগরে নিউ স্টার ক্লাব এবার মন্দিরের আদলে মণ্ডপ তৈরি করেছে। এই পুজো কমিটির অন্যতম কর্মকর্তা সনৎ দে, যিনি নৈহাটি বিধানসভা কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের প্রার্থীও। সনৎবাবু জানালেন, এবার আমাদের পুজো ৫৯ বছরে পড়ল। নৈহাটির রেলওয়ে হকার্স ইউনিয়ন পুজো কমিটি বৈষ্ণো দেবীর মন্দিরের আদলে মণ্ডপ তৈরি করেছে, জানালেন পুজো কমিটির এক কর্মকর্তা বিষ্ণু অধিকারী।
কাঠগোলা পুজো কমিটির থিম এবার অঙ্গীকার। পুজো কমিটির এক কর্মকর্তা সমীর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, এবার আমাদের পুজো ৭৪ বছরে পড়়ল। নারীশক্তিকে আমরা মণ্ডপসজ্জায় ফুটিয়ে তুলেছি। মণ্ডপে ইন্দিরা গান্ধী থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিখ্যাত নারীর ছবি দেওয়া হয়েছে। নৈহাটির গোপাল স্মৃতি সঙ্ঘ পুজো কমিটিও এবার মন্দিরের আদলে মণ্ডপ তৈরি করেছে। পুজো কমিটির এক কর্মকর্তা সৌমেন সেন বলেন, এবার আমাদের পুজো ৬০ বছরে পড়ল।
দি লোহাঘাট পার্ক অ্যাসোসিয়েশনের পুজোর থিম এবার ইচ্ছেডানা। পুজো কমিটির এক কর্মকর্তা বিজয় রায় বলেন, এবার আমাদের পুজো ৬০ বছরে পড়ল। খাঁচায় আটকে থাকা পাখির যন্ত্রণাকে তুলে ধরা হয়েছে মণ্ডপে। নৈহাটির দিশারী ক্লাব এবার বৌদ্ধ মন্দিরের আদলে মণ্ডপ তৈরি করেছে। পুজো কমিটির এক কর্মকর্তা উত্তম মিত্র বলেন, এবার আমাদের পুজো ৫৫ বছরে পড়ল। কৃষ্ণনগরের প্রতিমা আর চন্দনগরের আলোয় সেজে উঠবে মণ্ডপ। পুরনো বিডিও অফিস এলাকায় ২৯ হাত কালী এবারও বিশেষ চমক। পুজো কমিটির এক কর্মকর্তা তুষারকান্তি ঘোষ বলেন, বরাবরই আমাদের প্রতিমা দেখতে ভক্তদের ঢল নামে। এবারও তাই হবে। এছাড়া গৌরীপুর নাগরিকবৃন্দের পুজো কমিটির থিম সৃষ্টি থেকে উৎসব। পুজোর কর্মকর্তা রণজয় কর্মকার জানিয়েছেন, এবার ৫৩ বছরের পুজোয় দড়ি দিয়ে মণ্ডপ তৈরি করা হচ্ছে।
সব মিলিয়ে জমজমাট নৈহাটির কালীপুজো। পুরসভার চেয়ারম্যান অশোক চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, লক্ষ লক্ষ মানুষ কালীপুজো দেখার জন্য নৈহাটিতে আসেন। পুলিসের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক হয়েছে। আজ বুধবার থেকেই নৈহাটিতে দীপাবলির উৎসব শুরু হয়ে যাবে।