নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: দলবল নিয়ে এসে ফিল্মি কায়দায় প্রোমোটারকে গাড়িতে করে অপহণের চেষ্টা হলো। বাধা পেয়ে পিস্তল দিয়ে ভয় দেখানোর পর গুলিও চলল। এরপর রাস্তায় ফেলে আব্দুল আবিদ ওরফে ইমরান নামে ওই প্রোমোটারকে চপার দিয়ে কোপানোর অভিযোগও উঠেছে। মঙ্গলবার ভোর সাড়ে তিনটে নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে নারকেলডাঙা থানা এলাকার শিয়ালদহের কাইজার স্ট্রিটে। শরীরের পাঁচটি জায়গায় আঘাত নিয়ে ইমরান সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঘটনার পর থেকেই পলাতক অভিযুক্ত কুখ্যাত দুষ্কৃতী জগ সহ চারজন।
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নারকেলডাঙা নর্থ রোডের বাসিন্দা ইমরান এলাকায় প্রোমোটিং করেন। তাঁর পরিবার সূত্রে জানা যাচ্ছে, এই এলাকায় অনেক দিন ধরেই যাতায়াত রয়েছে জগ নামে এক কুখ্যাত তোলাবাজের। বউবাজার, জোড়াসাঁকো এলাকায় বিভিন্ন ব্যবসায়ীকে হুমকি বা ভয় দেখিয়ে মোটা টাকা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে জগের বিরুদ্ধে। নারকেলডাঙার প্রোমোটার ইমরানের কাছ থেকে বেশ কয়েকবার তোলা চাইলেও, তিনি তা না দেওয়ায় রাগ ছিল জগের। মাস দুয়েক আগে সে বউবাজার থানার হাতে গ্রেপ্তার হয়। তাকে ধরিয়ে দেওয়ার পিছনে ইমরানের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। জেলে বসে জগ জানতে পারে, তাকে গ্রেপ্তারের পিছনে হাত রয়েছে ইমরানের। তিনদিন আগে জামিন পায় জগ। বাইরে এসে সে ঠিক করে ইমরানকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়ার।
ইমরানের দাদা আব্দুল নাসির জানিয়েছেন, ভাই কাজ সেরে রাত ১০টা নাগাদ বাড়ি ফেরে। বারোটা নাগাদ কাইজার স্ট্রিট এলাকার কয়েকজন বন্ধুর ফোন আসে। বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান ইমরান। কাইজার স্ট্রিটে এক বন্ধুর অফিসে গল্পগুজব করতে করতে মাঝরাত হয়ে যায়। ইমরান যে সেখানে অনেক রাত অবধি থাকেন, এই বিষয়টি জানত জগ। সেখান থেকে যখন বেরোনোর তোড়জোড় করছিলেন এই সময় গাড়ি থেকে ইমরানের নাম ধরে একজন ডাকে। বাইরে আসতেই তাঁকে ঘিরে ধরে তিন-চারজন। প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য, গাড়িতে তুলে অপহরণ করার চেষ্টা হয় ইমরানকে। তাঁকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেন দুই বন্ধু। কিন্তু তাঁদেরও গান পয়েন্টে নিয়ে আলাদা করে করে দেয় ইমরানের থেকে। আব্দুলের দাবি, এরপর জন এক রাউন্ড গুলি চালায়। গুলির ছররা তাঁর ভাইয়ের হাতে লাগে। তিনি বাঁচার চেষ্টা করলে চপার বের করে শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত করে তারা। এরপর অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়। দুষ্কৃতীদের হাত থেকে ছাড়া পাওয়ার পর তাঁর এক বন্ধু ফোন করেন ইমরানের বাড়িতে সমস্ত ঘটনার কথা জানান। পরিবারের লোকজন এসে তাঁকে উদ্ধার করে এনআরএস হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে তাঁকে এসএসকেএম হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। খবর পেয়ে আসে নারকেলডাঙা থানার পুলিস। তারা ইমরানের কাছ থেকে গোটা ঘটনার বিবরণ নেয়। পুলিসের দাবি, তাঁর শরীরে কোনও গুলি লাগেনি এবং গুলিও চলেনি।