নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: একটা সময় বিনয় চক্রবর্তী নামে এক তান্ত্রিক থাকতেন দত্তপুকুরের কালাচাঁদ পাড়ায়। বিনয়বাবুর বাড়িতে মা কালী অধিষ্ঠিত পঞ্চমুণ্ডীর আসনে। পুজো করতে করতে তান্ত্রিক কখনও শূন্যে উঠে যেতেন। কখনওবা তাঁর শরীরে অদ্ভূত পরিবর্তন লক্ষ্য করা যেত। সেই সময় প্রতি অমাবস্যায় হতো যজ্ঞ। সেই তান্ত্রিক এখন প্রয়াত হয়েছেন। কিন্তু সেই ধারা বজায় রেখে এখনও দত্তপুকুরে কালাচাঁদ পাড়ার তান্ত্রিক বাড়ির কালীপুজো চলে আসছে। এবার সেই পুজো ৫০ বছরে পড়ল। এলাকার মানুষের কাছে ওই বাড়ি ‘তান্ত্রিক বাড়ি’ হিসেবেই পরিচিত।
চিরাচরিত ঐতিহ্য মেনে এবারও কালীপুজোর আয়োজন করেছেন গোপাল ভট্টাচার্য। তান্ত্রিক বাড়ির কালীমূর্তি খুব জাগ্রত বলেই বিশ্বাস স্থানীয়দের। এই পুজো দেখতে স্থানীয়রা তো বটেই, দূর-দূরান্ত থেকেও বহু মানুষ আসেন। এক সপ্তাহ আগে মন্দিরের বেদী থেকে মাকে নামানো হয়। মন্দিরেই চলে মায়ের অঙ্গসাজ। চলছে রংয়ের কাজ। কালীপুজোর দিন মাকে বেদীতে তোলা হবে। মায়ের প্রাণ প্রতিষ্ঠার পর শুরু হবে মায়ের পুজো। কালাচাঁদ পাড়ার ওই তান্ত্রিক বাড়িতেই এখন থাকেন গোপাল ভট্টাচার্য। বিনয়বাবু বাড়িতে রক্ষাকালীর পুজো শুরু করতেন। লোকমুখে প্রচলিত, একদিন স্বপ্নাদেশ পান বিনয় তান্ত্রিক। তাঁকে মা কালী পুজো করার কথা বলেন। শুধু তাই নয়, তাঁকে বলা হয়েছিল পঞ্চমুণ্ডীর আসনে বসাতে। মায়ের সেই স্বপ্ন পেয়ে সংসার ধর্ম ত্যাগ করে তিনি চালু করেন পুজো। বাড়ির পাশেই তৈরি করেন ছোট একটা মন্দির। মন্দিরে পঞ্চমুণ্ডীর আসনে রাখেন মাকে। ১৪ বছর আগে তান্ত্রিক বিনয় চক্রবর্তী প্রয়াত হন। পরে ওই বাড়ি কিনে নেন গোপাল ভট্টাচার্য। তিনি সেই থেকেই এই বাড়িতে ধারাবাহিকভাবে কালীপুজো করে আসছেন। প্রতি অমাবস্যায় এখানে হোমযজ্ঞ সহকারে পুজো হয়। দূর-দূরান্ত থেকে বহু ভক্তের সমাগম হয় দত্তপুকুরের কালাচাঁদ পাড়ার তান্ত্রিক বাড়িতে। এনিয়ে গোপালবাবু বলেন, কালী মন্দির সহ এই বাড়িটি আগে একজন তান্ত্রিকের ছিল। সেই থেকে আজও তান্ত্রিক বাড়ি বলেই পরিচিত। আমি নিজের সাধ্যমতো কালীপুজো করে আসছি। বহু ভক্ত সহযোগিতা করেন। অনেকেই মায়ের কাছে মানত করেন। পুজোয় আমাদের বলি হয় না। -নিজস্ব চিত্র