• ক্যাপ ভরলেই নাগাড়ে ৮ রাউন্ড ‘গুলি’, এবছর রিং ক্যাপ পিস্তলে মাত দীপাবলির বাজার  
    বর্তমান | ৩০ অক্টোবর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ‘ঠাস ঠাস দ্রুম দ্রাম, শুনে লাগে খটকা, ক্যাপ ফাটে? তাই বল! আমি ভাবি পটকা! ক্যানিং স্ট্রিটে কি ‘গ্যাং ওয়ার’ চলছে? ঠাস, দ্রুম শব্দ শুনে উঁকি দিলেন অনেকে। গ্যাং ওয়ারের মতোই অবস্থা। এর হাতে খয়েরি বন্দুক। ওর হাতে কালো তো তার হাতে সবুজ বন্দুক। শব্দে কান পাতা দায়। উড়ছে ধোঁয়া। দোকানদাররা খদ্দের টানার জন্য অনর্গল গুলিগোলা চালাচ্ছেন। এ বন্দুকে বারবার ক্যাপ ভরতে হয় না। একবার ভরলেই আট রাউন্ড গুলি একনাগারে ফায়ার করা যাবে। ফলে উঁকি দিচ্ছিলেন যাঁরা বন্দুকের কায়দাকানুন দেখে তাঁদের চোখ কপালে। ‘ছেলের জন্য এ বন্দুক না কিনলেই নয়,’ বলে দরদস্তুর শুরু করলেন উঁকি দেওয়া ব্যক্তি। 

    এটি হল ‘রিং ক্যাপ বন্দুক’। দাম ৩০ টাকা। আর তার সঙ্গে ক্যাপ কিনতে হবে। ১০ টাকায় পাওয়া যাবে ন’টি চাকতি। প্রতি চাকতিতে আটটি করে ক্যাপ। এক রাউন্ড ভরলে আটবার নিশ্চিত ফায়ার। দোকানদাররা বন্দুক আর ক্যাপের জোগান দিতে নাজেহাল। বাজার পুরো ভরা। ‘বিক্রি কেমন হচ্ছে দাদা?’ প্রশ্নের উত্তরে এক দোকানি বলেন, ‘বেশি কথা বলার সময় নেই ভাই। যা লাগবে নিয়ে যান। বাছাবাছির সময় নেই। হট সেল আছে।’ হট সেলের ফিকিরে বন্দুকে ক্যাপ ভরা হবে কীভাবে? ফাটানো হবে কীভাবে? দেখানোর সময়ই নেই তাঁর। বলেন, ‘ওর কাছে যান। দেখে নিন।’ তাঁর কাছে গিয়ে দেখা গেল, আসল রিভলভারের মতো বন্দুকটি মাঝখান থেকে দু’আধখানা হয়ে খুলে যাচ্ছে। তারপর সিনেমায় দেখানোর মতো প্রসেস। আটটা ক্যাপ ঠেসে বসাতে হচ্ছে ম্যাগাজিনে। ক্যাপ বিশেষভাবে ডিজাইন করা। গোল চাকতির মধ্যে পরপর বসানো আলপিনের ডগার আকারের ক্যাপ। বসিয়ে বন্দুক ‘কক’ করতে হবে। ব্যাস, সেটি গুলি ছোড়া, সরি ক্যাপ ফাটানোর জন্য তৈরি। ট্রিগার টিপলেই আগুনের ঝলকানি আর ফটাস-ঠাস-দ্রাম শব্দ, সঙ্গে পাতলা ধোঁয়া উড়ে বাতাসে বারুদের গন্ধ তৈরি করছে। 

    বাগুইআটির দিলীপ কুণ্ডু পাঁচটি কিনলেন। দোকানি এক টাকাও দাম কমালেন না। বললেন, ‘বড়বাজারে নতুন জিনিস পাই। তাই প্রতিবছর আসি। এ বছর এ বন্দুকটা নতুন পেলাম।’ শুধুই কি এই বন্দুক! একেবারে আসলের মতো দেখতে অটোমেটিক পিস্তলের মতো দেখতে ক্যাপ বন্দুকও রয়েছে। আর জনপ্রিয় দেশলাই বন্দুক তো আছেই। আর আছে হরেক রকমের প্রদীপ। মাটির প্রদীপ, জল দেওয়া প্রদীপ আর নানা রকমের রংবেরঙের মোমবাতি। পাশাপাশি বিক্রি হচ্ছে রকমারি আলো। খুচরো ব্যবসায়ী, গৃহস্থ সকলেরই এখন গন্তব্য ক্যানিং স্ট্রিট। এসবের সঙ্গে চত্বরজুড়ে বাজিও বিক্রি হচ্ছে। কিনতে ভিড় কম নয়। তবে বাজার মাত, রিং ক্যাপ বন্দুকে।
  • Link to this news (বর্তমান)