বৈঠক শেষে কৃষিমন্ত্রী জানান, ডিভিসি জল ছাড়ায় পুজোর আগেই বন্যা পরিস্থিতির মুখে পড়েছিলেন কৃষকেরা। আর পুজো মিটতেই তাঁদের উপরে পড়েছে দানার কোপ। ফলে দক্ষিণবঙ্গের আট জেলায় অন্তত ৯ লক্ষ কৃষকের হতশ্রী অবস্থা।
ফসলের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে আলোচনা শুরু হলেও এ দিনের বৈঠকে উঠে এল আনাজের মুল্য বৃদ্ধির প্রসঙ্গও। প্রসঙ্গত, সোমবার সার এবং শস্যবিমা নিয়ে বৈঠক করেছিলেন কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। সে বৈঠকে কৃষিমন্ত্রী স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন, সার সংক্রান্ত কোনও রকমের কালোবাজারি বরদাস্ত করা হবে না। এ ব্যাপারে কোনও অভিযোগ পেলে তার দায় যে সংশ্লিষ্ট এলাকার কৃষি আধিকারিকের উপরেই বর্তাবে, তা এ দিনও জানিয়ে দিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী।
কৃষিকর্তাদের বয়ান অনুসারে সর্বাধিক ক্ষতি হয়েছে— পূর্ব মেদিনীপুর দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং পূর্ব বর্ধমানের বিস্তীর্ণ এলাকায়। এ ছাড়াও ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং উত্তর ২৪ পরগনা, বীরভূম এবং হুগলির বেশ কিছু এলাকায়, বিশেষত আনাজের ফলনে ক্ষয়ক্ষতির আভাস মিলেছে। শস্যবিমার সময়সীমা ইতিমধ্যেই নভেম্বরের ৩০ তারিখ পর্যন্ত বাড়ানোর কথা ঘোষণা করেছে নবান্ন। এ দিন কৃষি দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ঝাড়গ্রামে ২৯ হাজার ৯৩৪ জন, হুগলিতে ৭৫ হাজার ২৪৫ জন, বাঁকুড়ায় ২ লক্ষ ১০ হাজার ৫৫৯ জন, পূর্ব মেদিনীপুরে ১ লক্ষ ২৩ হাজার জন, হাওড়ায় ১ হাজার ৭৯৫ জন, পূর্ব বর্ধমানে ১ লক্ষ ৪৪ হাজার ৪৫০ জন, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ৮৫ হাজার ৬২৫ জন, উত্তর ২৪ পরগনায় ১৫ হাজার ৯৬০ জন, বীরভূমে ২৬ হাজার ৯৭৪ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সংখ্যাটি অবশ্য চূড়ান্ত নয় বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী।
তবে নবান্নের খবর, এখনও পর্যন্ত ৬১ লক্ষ ৫৫ হাজার কৃষক ক্ষতিপূরণের জন্য আবেদন করেছেন। মন্ত্রী বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন ক্ষতির টাকা পাওয়ার ক্ষেত্রে কোনও কৃষক যেন বঞ্চিত না হন, তা দেখতে হবে।’’ তিনি জানান, বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ— বিমা সংস্থাগুলির সঙ্গে আলোচনা করে কৃষকদের শস্যবিমা নিশ্চিত করতে হবে।