কথিত আছে, অসুস্থ ঠাকুর রামকৃষ্ণকে দেখতে মা সারদা কামারপুকুর থেকে দক্ষিণেশ্বর যাচ্ছিলেন। যাওয়ার পথে রঘু ডাকাত ও গগন ডাকাত মায়ের পথ আটকে দাঁড়ায়। কিন্তু ডাকাতরা সেই সময়ে রক্তচক্ষু মা কালীর মুখ দেখতে পায়। ভুল বুঝতে পেরে মা সারদার কাছে ক্ষমা চায় তারা। সন্ধ্যা নামায় সেই রাতে ডাকাতদের আস্তানায় মা সারদাকে থাকার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। মা সারদাকে রাতে খেতে দেওয়া হয় চালকড়াই ভাজা। সেই রেওয়াজ মেনেই আজও কালীপুজোর দিনে মায়ের প্রসাদ হিসাবে এখানে চালকড়াই ভাজা দেওয়া হয়। এ ছাড়াও কালীপুজোর দিন লুচি ভোগ, ফল দেওয়া হয় নৈবেদ্যে।
মন্দিরের পুরোহিত সুভাষচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, কালীপুজোর দিন চার প্রহরে চার বার পুজো ও ছাগ বলি হয়। মল্লিকপুর গ্রামে এই ডাকাতকালী মন্দির থাকার কারণে আশেপাশের জামিনবেড়িয়া, পুরুষোত্তমপুর ও মল্লিকপুর গ্রামের কোনো বাড়িতে কালীপুজো হয় না। এমনকি কারো বাড়ির দেওয়ালে টাঙানো থাকে না ক্যালেন্ডারে আঁকা কালীমূর্তির ছবিও। বছরে একবার কালীপুজোর দিন গ্রামের 'শূদ্রদের' আনা গঙ্গাজলে ঘটের জল পাল্টানো হয়। ঘটের জল পাল্টানোর সময় মন্দিরের দরজা বন্ধ করে রাখা হয়। সেইসময় মহিলাদের মন্দিরের গর্ভগৃহে প্রবেশ নিষেধ থাকে।
মন্দিরের ট্রাস্টি বোর্ডের সম্পাদক মদনমোহন কোলে বলেন, আগে ডাকাতরা মাটির কুঁড়েঘর বানিয়ে মা কালীর মূর্তি প্রতিষ্ঠা করে পুজো শুরু করে। পরে বর্ধমানের রাজা একটি মন্দির তৈরির জন্য জমি দান করেন। পরবর্তীতে স্বপ্নাদেশ পেয়ে সিঙ্গুর থানার চালকেবাটি গ্রামের মোড়লরা এই মূর্তি প্রতিষ্ঠা করেন। কালী পুজোর দিন মোড়লদের পুজোর পর অন্য ভক্তদের পুজো শুরু হয়।