• পুরোহিতের মৃত্যু হলে মা চলে যেতে চান, তখন মাকে শিকল দিয়ে বেঁধে ফেলা হয়...
    ২৪ ঘন্টা | ৩০ অক্টোবর ২০২৪
  • বাসুদেব চট্টোপাধ্যায়: এই বাংলার বুকেই দেবীকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়। বেঁধে রাখা হয় মন্ত্রের মাধ্যমে। এমন প্রথা পশ্চিম বর্ধমান জেলার কুলটিস্থিত লছিপুর সর্বজনীন কালীমাতা মন্দিরের।

    সারা বছর শিকলে বাঁধা অবস্থাতেই এই দেবী নিত‍্যপুজো গ্রহণ করেন। একমাত্র দুর্গাপুজোয় বিজয়া দশমীর দিন শিকলের বাঁধন থেকে মুক্তি ঘটে দেবীর। সেই দিন দেবীর নিরঞ্জন হয়। তারপর সেই কাঠামো তুলে এনে পুনরায় নতুন প্রতিমা গড়া হয়। ওই মন্দিরে অন‍্যান‍্য দেবদেবীর মূর্তিও আছে। তবু জনমানসে বিশ্বাস, মন্দিরের এই কালীমাতা খুবই জাগ্রত।

    বহু প্রাচীনকাল থেকে ওই মন্দিরে পুজোর প্রচলন থাকলেও নথিবদ্ধ ইতিহাস বলছে, এই মন্দিরের পুজো, খুব বেশি দিন নয়, ৬২ বছর ধরে চলে আসছে। এই মায়ের আরাধনাকারী তথা পূজারি ছিলেন ইন্দু দিয়াসি। মন্দিরটি আগে মাটির ঘরের মতো ছিল। কালের নিয়মে ঝড়-বৃষ্টিতে মাটির ঘরের মন্দির ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এক সময় পড়ে যায় ঘরটি। পরবর্তী ক্ষেত্রে পাকাদালানের মন্দির গড়া হয়।

    কথিত আছে, দেবীর আরাধনাকারী ইন্দু দিয়াসির মৃত‍্যু হলে দেবী মন্দির ত‍্যাগ করে চলে যেতে চান। সেই সময়ে ইন্দু দিয়াসির একটি হাত কেটে এনে দেবীর যাত্রা ভঙ্গ করা হয়। তারপর থেকেই দেবীকে শিকল পরিয়ে রাখা হয়। 

    স্থানীয়দের মধ‍্যে প্রচলিত, দেবী সেখানে রাত্রে পরিভ্রমণে বের হন। তাঁরা তাঁদের পূর্বপুরুষের মুখে এ কথা শুনে এসেছেন। কালীপূজোর দিনে ধুমধাম-সহযোগে পুজো হয়। প্রতি বছরই কালীপুজোর দিনে দূর দূরান্ত থেকে ভক্তদের আগমন ঘটে মন্দিরে। বর্তমানে ওই মন্দিরে পুজোর দায়িত্ব সামলাচ্ছেন ষষ্ঠী পণ্ডিত। পুজোর দিনে তাঁর উপর এখনও দেবীর ভর আসে বলে জানা গিয়েছে। কালীপুজোর দিনে এ মন্দিরে হয় বিশেষ পুজো-অর্চনা।

  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)