জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: জামিন না পেয়েও জেলমুক্ত বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়াল বনগাঁ আদালত চত্বরে। কীভাবে এই ঘটনা ঘটল? কারা আছে এর নেপথ্যে, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। আইনজীবীদের দাবি, কোনও বিশেষ চক্রের দুর্নীতিতেই জামিন ছাড়া জেলমুক্ত হচ্ছে অনুপ্রবেশকারীরা। বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হবেন তাঁরা।
বুধবার সকালে বনগাঁ আদালত চত্বরে সাংবাদিক সম্মেলন করেন বনগাঁ ল ইয়ারস অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সমীর দাস। সমীরবাবুর অভিযোগ, গত ২১ অক্টোবর খলিল খালাসী নামে এক বাংলাদেশি চোরাপথে এদেশে আসার সময় বাগদা থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করে তাঁকে। বনগাঁ মহকুমা আদালতের বিচারক তাকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতে রাখার জন্য নির্দেশ দেন। ৪ নভেম্বর তারিখ জেল হেফাজত শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু মামলার আইনজীবী মনোজকুমার সাহা মঙ্গলবার খবর পান ওই আসামী জামিনে মুক্ত হয়ে গিয়েছে। সে পালিয়ে যায়নি, ম্যাজিস্ট্রেটের স্বাক্ষর করে আসামিকে রিলিজ করে দিয়েছে। জি আর সেকশন থেকে এই ‘রিলিজ লেটার’ লেখা হয়েছে। বিষয়টি কলকাতা হাই কোর্টকে জানানো হবে। উল্লেখ্য, খলিল খালাসীর এখনও পর্যন্ত কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি।
সমীরবাবু আরও অভিযোগ করেন, “আরও বড় ঘটনা ঘটছে এখানে। বিভিন্ন ল ইয়ার বা ল ক্লার্ক যারা রিলিজ করেন, তাঁরা আমাদের জানিয়েছেন, ডাকাতি-খুন-ধর্ষণ- বধূহত্যার মতো ৩০০ থেকে ৩৫০ মামলার নথি হারিয়ে গিয়েছে। কোনও হদিশ নেই।” রেকর্ডগুলো কি বিক্রি হয়ে গেল না কি কেউ চুরি করল তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আইনজীবীরা। এই বিষয়টিও কলকাতার হাই কোর্টের রেজিস্টারের দ্বারস্থ হবেন তাঁরা।
সূত্রের খবর, এই মামলায় বাংলাদেশিকে অনুপ্রবেশের সহযোগিতা করার অভিযোগে অভিজিৎ মণ্ডল নামে এক ভারতীয়কেও গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সেই দিন তাঁর জামিন মঞ্জুর করেন বিচারপতি। কিন্তু জি আর সেকশনের গাফিলতিতেই জামিন ছাড়াই মুক্ত হয়েছে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী, এমনই দাবি আইনজীবীদের। বিষয়টি নিয়ে তদন্তের দাবি তুলে সোচ্চার হয়েছেন বনগাঁ আদালতের আইনজীবী ল’ক্লার্ক সংগঠনের সদস্যরা |