কেতুগ্রামের তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক শেখ শানওয়াজ মণ্ডল বিজয়া সম্মিলনীর মঞ্চ থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুখ্যমন্ত্রী বলে সম্বোধন করেন। তাতে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে রাজ্য–রাজনীতিতে। কিন্তু কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র আরজি কর হাসপাতালের ঘটনা এবং তা সামলানো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেভেলের নয় বলেই মন্তব্য করেছেন। তাতে আর একরকম বিতর্ক দানা বেঁধেছে। ওটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যাপার, মুখ্যমন্ত্রীর ব্যাপার বলেছেন মদন। তবে মদনের এই মন্তব্যকে অবাঞ্ছিত বলেছেন কুণাল ঘোষ।
আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয়। ওই ঘটনার পর থেকে প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে ওঠে গোটা বাংলা। জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি, আমরণ অনশন থেকে শুরু করে রাত দখল, ভোর দখল সব হয়েছে। তারপর বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপে তা উঠে যায়। কামারহাটির তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক মদন মিত্র বলেন, ‘অভিষেক বোধহয় অসুস্থ ছিল শুনেছি। অপারেশন করাতে গিয়েছে। অসুস্থ অবস্থায় তো এসব পারে না। আর যে লেভেলে ব্যাপারটা ছিল, সেটা অভিষেক লেভেলের ব্যাপার ছিল না। সেটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যাপার ছিল। মুখ্যমন্ত্রীর ব্যাপার ছিল। ওখানে তো তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সমাবেশ করে কিছু করা যেত না। যদি ওরকম সমাবেশ হতো তাহলে সেটা ভুল হতো।’
মদন মিত্র তৃণমূল কংগ্রেসের প্রথম দিনের সঙ্গী। নানা উত্থান পতন দেখেছেন তিনি। তাই এখন দলের অনেকের উপর খাপ্পা তিনি। তাই কামারহাটির বিধায়কের বক্তব্য, ‘একটা কথা মনে রাখতে হয় বিভীষণ না থাকলে কিন্তু রাম রাবণকে মারতে পারতেন না। বিভীষণরা চিরকালই ছিলেন এবং খুব ভাল পজিশনে ছিলেন। রাবণের ভাই। আর এখনও সেটা খুঁজলেই পাওয়া যাবে। অত চালের মধ্যে থেকে কাঁকর বেছে দেয় মেয়েরা। সেখানে আর একটা বিভীষণ লম্বা চওড়া, পরিষ্কার একটা মানুষের মতো, বিভীষণ খুঁজে পাওয়া যাবে না। আচরণ লক্ষ্য করলেই বিভীষণ পাবেন।’
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল কংগ্রেসের সেকেন্ড ইন কমান্ড। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরেই তাঁর স্থান। তাঁকে নিয়ে মদন মিত্রের এই মন্তব্য়কে ভালভাবে নেননি কুণাল ঘোষ। তৃণমূল কংগ্রেসের এই নেতার কথায়, ‘অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথমেই ট্যুইট করে নিজের বক্তব্য জানান। পরে তাঁর চোখের অপারেশনের জন্য বিদেশ যেতে হয়। সব নজর রেখেছেন। এই কথাগুলি এখন সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিক। আমরা সবাই যাঁরা তৃণমূল কংগ্রেস করি, তাঁদের কাছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই শেষ কথা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেনাপতিত্বে তৃণমূল কংগ্রেস একটা পরিবার।’