সংবাদদাতা, কালনা: পুজোর ছুটির মধ্যে নাবালিকা স্কুল পড়ুয়ারা প্রেমের টানে ঘর ছাড়ছে। তাদের উদ্ধার করে বাবা-মার কাছে ফিরিয়ে আনতে হিমশিম খাচ্ছে পুলিস। ইতিমধ্যে গত ২০ দিনে কালনা ও নাদনঘাট থানা এলাকার ১৫ জন পালিয়ে যাওয়া নাবালিকাকে উদ্ধার করে বাবা-মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছে পুলিস।
সরকারি, বেসরকারিভাবে সচেতনতার পরও নাবালিকা বিয়ে আটকানো যাচ্ছে না। আগের থেকে প্রবণতা কমলেও ঘটছে নাবালিকা বিয়ে। অল্প বয়সে প্রেমের ফাঁদে পড়ছে নাবালিকারা। পুজোর ছুটি চলছে। দীর্ঘ পুজোর ছুটিতে স্কুল পড়ুয়া নাবালিকারা সোশ্যাল মিডিয়ায় আলাপ থেকে জমে ওঠা প্রেমের টানে ঘর ছাড়ছে। এখনও পর্যন্ত স্কুল ছুটির মধ্যে কালনা থানা এলাকায় ১০ জন নাবালিকার ঘর ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ দায়ের হয়েছে কালনা থানায়। পুলিস কেস রুজু করে নাবালিকা উদ্ধারে নেমে পড়ে। উদ্ধার হয় ৯ জন নাবালিকা। নাদনঘাট থানায় এমন অভিযোগ হয় পাঁচটি। পাঁচজনকে পুলিস উদ্ধার করেছে। এইসব নাবালিকা উদ্ধারে হিমশিম খেতে হচ্ছে পুলিসকে। পুলিস খোঁজ খবর নিয়ে জানতে পারছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে নাবালিকারা প্রেমের টানে ঘর ছেড়েছে। এমনও দেখা গেছে, প্রেমের টানে বিয়ে করে পুলিসের অভিযানের উপস্থিতি বুঝে মুছে ফেলছে সিদুর, খুলে ফেলছে শাঁখা। পুলিসের কছে নাবালিকারা স্বেচ্ছায় বাড়ির সমস্যায় পালিয়ে যাওয়ার বয়ান দিচ্ছে। অধিকাংশ মেয়ে বাবা-মায়ের কাছে ফিরে যাচ্ছে। আবার আদালতের নির্দেশে হোমে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।
এসডিপিও রাকেশ চৌধুরী বলেন, নাবালিকা নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ পেলেই পুলিস তৎপরতার সঙ্গে উদ্ধারে উদ্যোগ নিচ্ছে। এর জন্য স্কুল ও সামাজিক স্তরে মেয়েদের মধ্যে সচেতনতা আরও বৃদ্ধি হওয়া দরকার।
কালনার এক গার্লস স্কুলের প্রধান শিক্ষক ফাল্গুনী মল্লিক বলেন, আমরা মাঝেমাঝেই মেয়েদের নিয়ে সচেতনতার শিবির করি। তাদের বোঝানো হয়। নাবালিকা বিয়ের নানা সমস্যার দিকগুলি তুলে ধরা হয়। আমরা মনে করি, অভিভাবকদের আরও সচেতন হওয়া দরকার।
পালিয়ে গিয়ে ঘরে ফেরা এক নাবালিকার বাবা বলেন, মেয়েরা বই, খাতা নিয়ে পড়তে যাচ্ছে। তারপর মেয়ে কোথায় যাচ্ছে, কী করছে, একজন বাবা-মা কতটা খোঁজ রাখতে পারে? মেয়েরা যদি নিজেদের ভালোটা না বোঝে, তবে বাবা মায়েদের অসহায় অবস্থার মধ্যে পড়তেই হবে!