সংবাদদাতা, হলদিয়া: দেভোগ সিটি সেন্টার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সর্বজনীন কালীপুজো ও দীপাবলি উৎসব ঘিরে শিল্পশহরে উন্মাদনা তৈরি হয়েছে। বুধবার চারদিনের আলোর উৎসবের সূচনা হয়েছে। পুজোর উদ্বোধনে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী বিপ্লব রায়চৌধুরী, জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজী, মহকুমা শাসক সুপ্রভাত চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ। এখানকার পুজোয় সম্প্রীতির মেলবন্ধন দেখা যায়। হিন্দু-মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ একসঙ্গে এই পুজো ও উৎসবের আয়োজন করেন। দুই সম্প্রদায়ের মানুষই পুজো কমিটির গুরুদায়িত্ব সামলান। আমন্ত্রণ থেকে আপ্যায়ন, পুজোর খিচুড়ি বিতরণ করেন হাতে হাত মিলিয়ে। উৎসবের অনুষ্ঠানে পড়াশোনা, খেলাধুলো, সামাজিক কাজে হলদিয়ার কৃতীদের সবার সামনে পরিচয় করিয়ে তাঁদের সম্মানিত করার রীতি রয়েছে। বন্দর শহরের প্রাণকেন্দ্র সিটি সেন্টারে এই পুজো দেখতে দর্শনার্থীদের ব্যাপক ভিড় হয়। উৎসবে রঙিন আতসবাজি ও আলোর রোশনাই দেখতে উৎসাহ নিয়ে ছুটে আসেন শহর ও গ্রামের বহু মানুষ। বিশাল বুদ্ধমূর্তিতে সেজে উঠেছে এবছরের মণ্ডপ। বাহারি আলোকসজ্জা, সামাজিক কাজ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, নরনারায়ণ সেবার উপর জোর দেন পুজো উদ্যোক্তারা। এবার তাদের পুজো ১৬তম বছরে পড়ল।
দেড় দশক আগে সিটি সেন্টার এলাকা যখন ধীরে ধীরে জমে উঠেছে তখনই স্থানীয় বাসিন্দাদের কথা ভেবে শুরু হয় এই পুজো। হলদিয়া পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল আজিজুল রহমানের নেতৃত্বে এই দীপাবলি উৎসব জনপ্রিয় হয়েছে। তিনিই ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সর্বজনীন কালীপুজো ও দীপাবলি উৎসবের সভাপতি। আজিজুল বলেন, পুজোর উদ্বোধনী মঞ্চে হলদিয়ার ১০টি স্কুলের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে প্রথম ২০জন কৃতীকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। সকলের হাতে বই, স্মারক ও দীপাবলির উপহার তুলে দিয়েছে পুজো কমিটি। থাইল্যান্ডের পাটায়ায় আয়োজিত আন্তর্জাতিক যোগাসন প্রতিযোগিতায়(এশিয়া প্যাসিফিক) হলদিয়ার তিন কিশোর-কিশোরী বিভিন্ন বিভাগে সোনা পেয়েছে।
সাব জুনিয়র বালক বিভাগে চ্যাম্পিয়ন অব চ্যাম্পিয়ন ও সোনা বিজয়ী অতনু মাইতি, বালিকা বিভাগে সোনা জয়ী নীলাক্ষী মাইতি এবং জুনিয়র বালক বিভাগে সোনা জয়ী ঋতপ্রভ চট্টোপাধ্যায় এবং তাদের কোচ রুমা চট্টোপাধ্যায়কে বিশেষ সম্মান জানিয়েছে পুজো কমিটি। এছাড়া জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়া হলদিয়া খো-খো খেলোয়াড়দের সম্মান জানিয়ে উৎসাহিত করা হয়েছে। এছাড়া জাতীয় চ্যাম্পিয়ন ওয়াটার পোলো দলের সদস্য হলদিয়ার পূজা দাস এবং ক্রীড়াবিদ ভগীরথ সামাইকে বিশেষ সম্মান জানানো হয়েছে।
পুজো কমিটির যুগ্ম সম্পাদক অশোক মণ্ডল ও সৌমেন মাইতি বলেন, পুজোয় কয়েকশো মানুষকে নতুন জামাকাপড় ও মশারি দেওয়া হচ্ছে। বৃহস্পতিবার আকর্ষণীয় শোভাযাত্রা সহকারে ঘটত্তোলন হবে। শুক্রবার সন্ধ্যায় খিচুড়ি ভোগ বিতরণ ও কলকাতার ডান্সট্রুপ মঞ্চ মাতাবে। শনিবার সন্ধ্যায় রয়েছে আতসবাজি ও বিচিত্রানুষ্ঠান।-নিজস্ব চিত্র