সংবাদদাতা, হলদিয়া: হলদিয়া টাউনশিপে বন্দর আবাসনে ক্লাস্টার ফাইভের আনলাকি থার্টিন ক্লাবের পুজোর এবারের চমক আদিবাসী জনগোষ্ঠীর জীবন। নগর জীবনের প্রেক্ষাপটে আদিবাসী সহজ সরল জীবনের বৈপরীত্য ফুটিয়ে তোলা হয়েছে মণ্ডপে। ক্লাস্টার ফাইভের আবাসিকরাই পুজোর উদ্যোক্তা। তিন দশক আগে বন্দরের আবাসিকরা ওই ক্লাব তৈরি করে কালীপুজো ও দীপাবলি উৎসব শুরু করেছিলেন। আবাসিকদের ছেলেমেয়েরা চাঁদা তুলে পুজো শুরু করেন। আনলাকি থার্টিনের কালীপুজো ও দীপাবলি উৎসব সবাইকে তিন দশক ধরে এক সূত্রে বেঁধে রেখেছে। দীপাবলিতে নবীন ও প্রবীণ আবাসিকদের মেলবন্ধন ঘটে। এবার ৩০তম বর্ষে পুজোর বাজেট প্রায় এক লক্ষ ২৫ হাজার টাকা। মণ্ডপের উচ্চতা প্রায় ৩০ফুট। ফোম ও থার্মোকল দিয়ে বিভিন্ন আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মানুষদের বিভিন্ন আকৃতির মুখোশ দিয়ে তৈরি হয়েছে মণ্ডপ। তাদের জীবনযাত্রার কাহিনী মণ্ডপজুড়ে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। প্রতিমা গড়েছেন টাউনশিপ দাসেরচকের মৃৎশিল্পী বিশ্বজিৎ মণ্ডল। তিনদিনের পুজোয় বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং সমাজসেবামূলক কর্মসূচি থাকছে। বৃহস্পতিবার পুজোর দিন সকালে আবাসনের বাসিন্দাদের চারাগাছ বিতরণ করা হবে। পুজো কমিটির সভাপতি মিন্টু প্রধান, অন্যতম কর্মকর্তা প্রদীপ বিজলি বলেন, পুজো উপলক্ষ্যে আবাসন চত্বর এলিডি আলো দিয়ে সাজানো হয়।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পুজো উদ্বোধন করবেন আবাসনের সবচেয়ে প্রবীণ হেমন্ত সর্দার। পঞ্চপ্রদীপ জ্বালিয়ে পুজোর সূচনা হবে। আবাসনের কচিকাঁচারা গান ও আবৃত্তি পরিবেশন করবে। শুক্রবার সকালে রয়েছে অঙ্কন প্রতিযোগিতা এবং খিচুড়ি প্রসাদ বিতরণ। সন্ধ্যায় ক্যুইজ প্রতিযোগিতা এবং নৃত্যানুষ্ঠান পরিবেশন করবে আবাসনের কচিকাঁচারা।
পুজো উদ্যোক্তা সন্দীপ মিদ্যা, প্রশান্ত প্রামাণিক, সুদীপ মিদ্যা, প্রলয় মণ্ডল বলেন, আমরা কর্মসূত্রে সকলেই সারা বছর বাইরে থাকি। পুজোর সময় বাড়ি ফিরে আসি। আমাদের কাছে কালী পুজোই শারদোৎসব। পুজোর সঙ্গে যুক্ত মহিলা সদস্য বিজয়লক্ষ্মী রাও, রিয়া কর, রিমা পাত্র বলেন, আমরা প্রতি বছর পুজোয় সহযোগিতা করি। নিজেরাই ভোগ রান্না করি। পুজোর কয়েকদিন ভীষণ আনন্দ কাটে সকলের। ক্লাবের অন্যতম সদস্য শশাঙ্কশেখর প্রামাণিক, ইমন মণ্ডল, শান্তনু অধিকারী, সুমন মণ্ডল বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য পুজো প্যান্ডেলের ভিতর জল জমে ছিল। পুজো নিয়ে অনিশ্চয়তা ছিল। রবিবার থেকে আবহাওয়া উন্নতি হওয়ার পর হলদিয়া বন্দরের সহযোগিতায় জল বের করে মাটির উপর ইট বিছিয়ে পুজো হচ্ছে। শনিবার সিঁদুর খেলার পর প্রতিমা নিরঞ্জন হবে।-নিজস্ব চিত্র