নবরত্ন ক্লাবের শ্যামাকালী পূজিত হবেন বৈষ্ণব মতে, নবদ্বীপের এই পুজোর প্রতিমার খরচ বহন করেন মানতকারীরা
বর্তমান | ৩১ অক্টোবর ২০২৪
সংবাদদাতা, নবদ্বীপ: ৬৯বছরের পুরনো নবদ্বীপের নবরত্ন ক্লাবের শ্যামাকালী মাতা। এই প্রতিমার রূপ শ্মশানকালী হলেও বৈষ্ণব মতে দক্ষিণাকালী রূপে নিশিরাতে পূজিত হন। দেবীর গায়ের রং ধূসর কালো। দু’পাশে ডাকিনী, যোগিনী ও কঙ্কাল থাকে। দেবীর মাথায় থাকে চাঁদ ও তারা। কোনও না কোনও মানতকারী প্রতি বছর প্রতিমার খরচ বহন করেন। শুধু প্রতিমা নয়, দেবীর কাছে অনেকেই সোনার টিপ, চাঁদমালা, খড়্গ সহ পুজোর অনেককিছুই মানত করেন। পুজোর দিন সকাল থেকে ভিড় করেন ভক্তরা। মুখেমুখে বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় এখন মা মানতের দেবী হিসেবেও পরিচিতি লাভ করেছেন। এবছর নবনির্মিত মন্দিরে পুজো হবে দেবীর। মনোস্কামনা পূরণ হলে মানতের পুজো দিয়ে যান সকলে। ৯ ফুটের এই দেবীর মূর্তি তৈরির খরচও বহন করেন কোনও না কোনও মানতকারী। প্রতিমার জন্য মানত করা ভক্তের নামেই প্রথমে পুজোর সংকল্প হয়। এরপর ক্লাবের নামে সংকল্প হয়। পুজো শেষ না হওয়া পর্যন্ত দুশোর বেশি স্থানীয় বাসিন্দা দেবীর নামে উপবাসে থাকেন। গোবিন্দদিঘি পূর্ব পাড়ের নবরত্ন ক্লাবের এই দেবীর কাছে প্রায় ৪০ বছর ধরে মানতের রীতি চলে আসছে। পুজো কমিটির সভাপতি অসিত চক্রবর্তী বলেন, একসময় এই এলাকায় জনবসতি তেমন ছিল না। দুর্গাপুজোর পর এলাকাটি ফাঁকা থাকত। এলাকার ন’জন যুবক এই পুজো শুরু করেছিলেন। পুজো কমিটির যুগ্ম সম্পাদক সামন্ত গুঁই ও সোমনাথ ধর বলেন, সংস্কৃতিমনষ্ক এই ক্লাব রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে নাটক প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে একাধিক পুরস্কারও পেয়েছে। বুধবার থেকে পুজো শুরু হয়ে গিয়েছে। ওইদিন সন্ধ্যায় নতুন মন্দিরের উদ্বোধন হয়। এদিন সকাল থেকে বসে আঁকো প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। সন্ধ্যায় স্থানীয় ও বাইরের শিল্পীদের সমন্বয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। পুজো উপলক্ষ্যে সামাজিক কাজ, স্থানীয় দুঃস্থদের শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। শুক্রবার প্রায় দু’হাজার মানুষের জন্য মহাপ্রসাদের ব্যবস্থা করা হবে। স্থানীয় বাসিন্দা সুরণজিৎ ভট্টাচার্য ও প্রবীর দাস বলেন, স্থানীয় বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষা ছিল এখানে মায়ের একটি মন্দিরের। মায়ের ইচ্ছায় পাকাপাকিভাবে এই মন্দির হয়েছে। মন্দির নির্মাণে পুজো কমিটির সভাপতি অসিত চক্রবর্তীর একটা বড় ভূমিকা রয়েছে। পুজো কমিটির অন্যতম কর্মকর্তা শ্যাম গুই বলেন, নিজেদের পুজো মনে করেই এলাকার সকলেই অংশগ্রহণ করেন। এই পুজো ঘিরে নবদ্বীপবাসীর মধ্যে আবেগ জড়িয়ে আছে। • নিজস্ব চিত্র