• ‘ডানা’য় ক্ষতি কতটা? মাঠে গিয়েই হিসেব কষছেন প্রশাসনিক কর্তারা
    বর্তমান | ৩১ অক্টোবর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, আরামবাগ: ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’র প্রভাবে চাষে ক্ষয়ক্ষতি কতটা, তা তদন্ত করতে রাজ্য থেকে পাঠানো হল প্রতিনিধি। এছাড়া জেলা, মহকুমা ও ব্লকস্তরের প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত হয়েছে বিশেষ দল। হুগলি জেলায় এমন ১৫টি টিম মৌজা ভিত্তিক ধানের ক্ষয়ক্ষতি খতিয়ে দেখার কাজ শুরু করেছে বলে কৃষিদপ্তর জানিয়েছে। ধানের ক্ষতির পাশাপাশি বাদ পড়া চাষিদের বাংলা শস্যবিমা স্কিমেও নাম নথিভুক্তকরণের কাজ শুরু করা হয়েছে। আরামবাগ মহকুমায় মঙ্গলবার থেকে কৃষিদপ্তরের আধিকারিকরা ফিল্ড ভেরিফিকেশন শুরু করেছেন। আরামবাগ, গোঘাট, পুরশুড়া ও খানাকুল ব্লকে এই সার্ভের কাজ শুরু হয়েছে। 

    কৃষিদপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’র প্রভাবে বিভিন্ন জায়গাতেই মাঠে ধান নুয়ে পড়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে। মৌজাপিছু ক্ষতি কতটা হয়েছে, তা সরেজমিনে দেখতেই টিম যাচ্ছে সরাসরি মাঠে। প্রত্যেক টিমে তিন থেকে চারজন করে কৃষিদপ্তরের কর্মী, আধিকারিক রয়েছেন। তাঁরা এলাকায় গিয়ে চাষিদের সঙ্গে কথাও বলছেন। তারসঙ্গে বাংলা শস্য বিমার ফর্মও সঙ্গে করে নিয়ে যাচ্ছেন। কোনও চাষি বিমার আবেদন করতে না পারলে স্পটেই তাঁর ফর্ম পূরণ করানো হচ্ছে। 

    কৃষিদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, আরামবাগ মহকুমায় প্রায় সাড়ে ১০ হাজার হেক্টর জমি সরেজমিনে খতিয়ে দেখার টার্গেট রয়েছে প্রতিনিধি দলের। ইতিমধ্যে প্রায় সাড়ে তিন হাজার হেক্টর জমির ফসল দেখা হয়েছে। বাকি জমিরও তথ্যও সংগ্রহ করছেন প্রতিনিধিরা। আগামী ১৫দিনের মধ্যে রাজ্যের কাছে রিপোর্ট পাঠানোর নির্দেশও রয়েছে। 

    প্রসঙ্গত, মাসখানেক আগে বন্যা পরিস্থিতির জেরে আরামবাগ মহকুমায় ধান চাষ ধাক্কা খায়। তারপর ফের ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’-র প্রভাবে মহকুমাজুড়ে ধান চাষে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন চাষিরা। ফলে কৃষিদপ্তরও ক্ষতিপূরণ বাবদ শস্য বিমায় জোর দিয়েছে। এক্ষেত্রে আধিকারিকরা হাতে তথ্য নিয়ে মাঠে নামছেন। সংশ্লিষ্ট মৌজায় কত জন চাষি রয়েছেন, তাঁদের  মধ্যে কতজন কৃষক বন্ধু প্রকল্পের আওতায় এসেছেন, কতজন এখনও বিমার আওতায় আসেননি, সেই দিকগুলি দেখা হচ্ছে বলে কৃষিদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে। মহকুমার প্রত্যেক ব্লকেই এই কাজ আগামী কয়েকদিন ধরে চলবে। 

    চাষিদের বক্তব্য, এবার বন্যা ও ‘ডানা’র জোড়া ফলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ধান চাষ। তাই ক্ষতিপূরণের খুবই প্রয়োজন। গোঘাটের চাষি অভিজ্ঞান ঘোষ বলেন, আমাদের এলাকায় বন্যায় সেভাবে ধানের ক্ষতি হয়নি। কিন্তু, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বৃষ্টিতে কিছু জমির ধানে ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। 

    আরামবাগের চাষি বলরাম ঘোষ বলেন, বন্যার সময় মুণ্ডেশ্বরী নদীর বাঁধ ভেঙে ডিভিসির জলে প্লাবিত হয় কৃষি জমিগুলি। ফলে সেই সময়ই বিপুল ক্ষতির মুখে পড়ে ধান। তারপর আবার ঝড়ের সময় বৃষ্টি হওয়ায় গাছগুলি জমিতে কার্যত শুয়ে যায়। ফলে পাকা ধান কতটা উদ্ধার করা যাবে, বুঝতে পারছি না।  -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)