• সামশেরগঞ্জে এবার তলিয়ে গেল প্রাচীন মসজিদ, উদ্বেগ
    বর্তমান | ৩১ অক্টোবর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, জঙ্গিপুর: ভয়াবহ ভাঙনে এবার প্রায় শতাধিক বছরের প্রাচীন জামে মসজিদ তলিয়ে গেল। বুধবার দুপুরের ঘটনায় সামশেরগঞ্জের লোহরপুরে নতুন করে আতঙ্ক ছড়ায়। গঙ্গা কয়েকদিন ক্ষান্ত থাকার পর এদিন আচমকাই ফের ভয়াবহ রূপ ধারণ করে। এদিন দুপুরে কয়েক মিটার জমি, একাধিক শৌচালয় সহ জামে মসজিদটি হুড়মুড়িয়ে নদীতে ভেঙে পড়ে। আতঙ্কিত বাসিন্দারা ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন। সন্ধ্যা পর্যন্ত বেশ কয়েকমিটার এলাকা নদী গর্ভে তলিয়ে যায়। জনবসতিপূর্ণ এলাকায় ধস নামায় আতঙ্কিত বাসিন্দারা। অনেকেই প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ঘর থেকে সরিয়ে নিতে শুরু করেছেন। নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাচ্ছেন বাসিন্দারা। প্রাচীন মসজিদটি তলিয়ে যাওয়ায় ধর্মপ্রাণ মানুষজন খেদ প্রকাশ করেন।

    সামশেরগঞ্জের বিডিও সুজিতচন্দ্র লোধ বলেন, নদীতে জলস্তর কমছে। স্বভাবতই বিভিন্ন জায়গায় নদীর পাড় ভাঙছে। এদিন একটি মসজিদের অধিকাংশই নদীতে তলিয়ে গিয়েছে। আশপাশে বহু বসতবাড়ি রয়েছে। এলাকাবাসীকে সতর্ক করা হয়েছে।

    জানা গিয়েছে, বুধবার দুপুর থেকেই লোহরপুরে ভাঙন শুরু হয়। নদী পাড়ের বেশ কিছুটা এলাকায় ফাটলের সৃষ্টি হয়। তারপর কয়েক মিটার জমি নিমেষেই তলিয়ে যায়। দুপুর ১২টা নাগাদ ভাঙন ভয়াবহ রূপ ধারণ করে। এদিন বিকেল পর্যন্ত ভাঙন অব্যাহত থাকে। লোহরপুর গ্রামের প্রায় ৯০বছরের পুরনো জামে মসজিদটি নদীতে ভেঙে পড়ে। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন বাসিন্দারা। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মাস খানেক আগে গভীর রাতে লোহরপুরে ভাঙন শুরু হয়েছিল। সেই সময় ভাঙনে তিনটি পাকা বাড়ি সহ একাধিক গাছপালা নদীগর্ভে তলিয়ে যায়। সে যাত্রায় মসজিদটি রক্ষা পেলেও কার্যত খাদের কিনারে ঝুলছিল। এদিন মসজিদটি সম্পূর্ণ ভেঙে পড়ে। মসজিদে আশপাশের কয়েকটি গ্রামের ধর্মপ্রাণ মানুষজন নামাজ পড়তেন। 

    এই মসজিদে শুক্রবার সাপ্তাহিক বিশেষ জুমার নামাজও অনুষ্ঠিত হতো। এদিনই ভোরে শেষবারের মতো নামাজ পড়েন বাসিন্দারা। মসজিদটি তলিয়ে যাওয়ায় ধর্মপ্রাণ মানুষজন কোথায় নামাজ পড়বেন, তা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন। মসজিদের ইমাম রফিকুল ইসলাম বলেন, আগেই ভাঙতে শুরু করেছিল মসজিদটি। এদিন প্রায় সম্পূর্ণ তলিয়ে যায়। এলাকাবাসী আতঙ্কে রয়েছে। 

    স্থানীয় প্রৌঢ়া তাজকেরা বেওয়া বলেন, খেয়ে না খেয়ে কোনওরকমে মাথা গোঁজার আশ্রয় টুকু করেছিলাম। সেই আশ্রয়টুকু নদীতে তলিয়ে যেতে বসেছে। এমন অবস্থায় ছেলেপুলে ও জিনিসপত্র নিয়ে কোথায় যাব? 

    আমাদের কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। গত কয়েকদিন ধরে গঙ্গার জলস্তর প্রতি নিয়ত কমছে। আর ভাঙন ততই বাড়ছে। নদীতে জল কমার ফলে পাড়ে ফাটলের সৃষ্টি হচ্ছে। বিশাল এলাকা নিয়ে ধস নামছে। খুবই আতঙ্কে আছি। - নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)