• বাংলা আবাসের সমীক্ষা শুরু হতেই দালাল চক্রের রমরমা
    বর্তমান | ৩১ অক্টোবর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: আবাস যোজনায় বাড়ির জন্য সার্ভে শুরু হতেই পাকা বাড়ির প্রত্যাশীদের ভিড় বাড়ছে বিডিও অফিসে। তালিকায় নাম থাকা এবং না থাকাদের ভিড়ে বিডিও অফিস ভিড়ে গমগম করছে। সেই ভিড়ে মিশে রয়েছে সুযোগসন্ধানীরাও। বাড়ি পাইয়ে দেওয়ার টোপ দিয়ে আড়ালে ডেকে টাকা নিচ্ছে তারা। সরকারি কর্মী পরিচয় দিয়ে‌ই এই লেনদেন হচ্ছে। ইতিমধ্যে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় একাধিক বিডিও অফিস চত্বরে টাকা নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এমন ঘটনা আটকাতে প্রত্যেক বিডিও অফিসে ‘প্রতারক থেকে সাবধান’ শীর্ষক নোটিস ঝোলানোর নির্দেশ দিলেন জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজী। বিডিও অফিসে এসে যাতে কেউ প্রতারিত না হন তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন ডিএম।

    জেলাশাসক বলেন, গোটা রাজ্যের সঙ্গে জেলায় আবাস সমীক্ষার কাজ চলছে। এইসময় বাড়ি পাইয়ে দেওয়ার নামে কেউ টাকা চাইলে প্রশাসনের নজরে আনুন। সরকারি প্রকল্পে বাড়ি তৈরির জন্য কোনওরকম টাকা দিতে হয় না। বিডিও অফিসে এই মর্মে নোটিস ঝোলানো হচ্ছে।

    ৩০অক্টোবর পর্যন্ত পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় প্রায় দেড় লক্ষ বাড়িতে আবাস প্রকল্পে বাড়ি করার জন্য সার্ভে হয়েছে। বিভিন্ন বিডিও অফিসে ফর্মপূরণ করার লাইন পড়ে গিয়েছে। নন্দীগ্রামে এক ব্যক্তি সাত হাজার টাকা খুইয়েছেন। স্ত্রীর স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ঋণ তোলার পর বিডিও অফিসে গিয়ে আবাসের ফর্ম পূরণ করে জমা দেন। সেখানেই এক দালাল বাড়ি পাইয়ে দেওয়ার লোভ দেখিয়ে নগদ সাত হাজার টাকা নিয়ে নেয়। শুধু নন্দীগ্রাম-১ নয়, অন্য কয়েকটি ব্লকেও একই ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গিয়েছে।

    আবাসের বাড়ি পাওয়ার জন্য ‘সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী’ নম্বরে ফোন করে অনেকেই আবেদন করেছেন। প্রতিটি ব্লকে সেই তালিকা পৌঁছে গিয়েছে। যেমন, পাঁশকুড়া ব্লকে মোট ১৩০৯জনের নাম এসেছে। ময়না ব্লকের আঁধারিয়া গ্রামের শ্যামল ভৌমিক, মির্জানগর গ্রামের ননীগোপাল মণ্ডল, গোজিনা গ্রামের শুভঙ্কর বাগ প্রমুখ সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীতে ফোন করে বাড়ি চেয়ে আবেদন করেছিলেন। ময়নায় এরকম সাড়ে তিনশো জনের তালিকা এসেছে। আগামী ১৪নভেম্বর পর্যন্ত গোটা জেলায় ওইসব আবেদনকারীর বাড়ি বাড়ি সার্ভে হবে বলে জানা গিয়েছে। ২০নভেম্বর তালিকা প্রকাশিত হবে। তারপর সাতদিন আপত্তি জানানোর সুযোগ থাকবে। 

    আবাস যোজনার তালিকায় নাম থাকার পরও অনেকেই বাড়ি পাননি। আবাসের তালিকায় নাম থাকা এবং না থাকা কয়েক হাজার আবেদন বিডিও অফিসগুলোতে জমা পড়েছে। ওইসব আবেদনকারীর বাড়ি সার্ভে করার সময় যাতে কেউ প্রতারিত না হন সেজন্য প্রশাসন সতর্কীকরণ নোটিস দিচ্ছে। শুধু বাড়ি পাওয়ার জন্য নয়, আবাস তালিকা থেকে নাম কাটার জন্যও আবেদন জমা পড়েছে। আবাস তালিকায় নাম থাকার পর অনেকেই নিজেদের উদ্যোগে পাকা বাড়ি বানিয়ে নিয়েছেন। এখন তাঁদের বাড়ির প্রয়োজন নেই। তাই আবাস তালিকা থেকে নাম কাটার জন্য বিডিও অফিসে অনেক আবেদন জমা পড়েছে। নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের দাউদপুর গ্রামের শেখ মইদুল ইসলামের নাম আবাস তালিকায় রয়েছে। নিজের আবাস আইডি নম্বর দিয়ে বিডিওর কাছে নাম বাদ দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন তিনি।
  • Link to this news (বর্তমান)