সোনার দোকান বন্ধের পর বাইকে দুষ্কৃতী হানা, বলরামপুরে লক্ষাধিক টাকা ও গয়না নিয়ে চম্পট
বর্তমান | ৩১ অক্টোবর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, পুরুলিয়া: ধনতেরসের রাতেই স্বর্ণ ব্যবসায়ীর গয়না ও নগদ ছিনতাইয়ের ঘটনায় বলরামপুরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। বুধবার রাত ১০টা নাগাদ বলরামপুর বাসস্ট্যান্ডের কাছে ঘটনাটি ঘটে। সেই সময় ব্যবসায়ী দোকান বন্ধ করছিলেন। দুই যুবক বাইকে চড়ে এসে তাঁর কাছে থাকা ব্যাগটি ছিনতাই করে চম্পট দেয়। ব্যবসায়ীর দাবি, ওই ব্যাগে লক্ষধিক টাকা ছিল। এছাড়াও দোকানে সোনা ও রুপোর গয়না ছিল। খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পুলিস। শুরু হয়েছে নাকা তল্লাশি।
জেলার পুলিস সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, একটি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ পাওয়ার পরেই সিসিটিভি ফুটেজ ধরে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছি। আশা করছি, ছিনতাইবাজরা শীঘ্রই ধরা পড়বে।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, সুরথ পড়্যা নামে ওই ব্যবসায়ীর বলরামপুর বাসস্ট্যান্ডের কাছেই সোনার দোকান রয়েছে। দোকানটি প্রায় ৩০ বছরের পুরানো। সুরথবাবু ও তাঁর ছেলে দোকানের দায়িত্ব সামলান। সুরথবাবুর অভিযোগ, বুধবার রাত ১০টা নাগাদ দোকান বন্ধ করবেন বলে সবকিছু গুছিয়ে নিয়ে বাইরে বেরিয়েছিলেন। সেই সময় তাঁর ছেলের খেয়াল হয়, ধনতেরস উপলক্ষ্যে ঝাঁটা নিয়ে বাড়ি ফিরতে হবে। ছেলে ঝাঁটা কিনবে বলে খুচরো টাকা নিতে ফের দোকানে ঢোকে। তখন সুরথবাবু বাইরে একাই গয়না ও টাকার ব্যাগটি নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। ঠিক সেই মুহূর্তে সিনেমার কায়দায় বাইকে এসে দুই দুষ্কৃতী ব্যাগটি ছিনতাই করে নিয়ে চলে যায়।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, ওই ব্যবসায়ী বাইরে দাঁড়িয়ে থাকার সময় একটি বাইক তাঁর গা ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। বাইকে দু’জন আরোহী ছিল। পিছনে যে বসেছিল, সে ব্যবসায়ীর বগলে থাকা ব্যাগটি ছিনিয়ে নেয়। ব্যবসায়ীর দাবি, ব্যাগে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা ও লক্ষাধিক টাকার সোনা ও রুপোর গয়না ছিল। ঘটনার পরেই চিত্কার চেঁচামেচি শুরু করে দেন ওই ব্যবসায়ী। আশেপাশের ব্যাসায়ীরা জড়ো হন। খবর যায় বলরামপুর থানায়। থানার ওসি কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে পুলিস বাহিনী ঘটনাস্থলে আসে।
ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছন ডিএসপি হেডকোয়ার্টার নির্মলকুমার দাস, সার্কেল ইন্সপেক্টর বাপ্পা মিত্র প্রমুখ। রাতেই তাঁরা তল্লাশি অভিযান শুরু করেন। সমস্ত থানাকে সতর্ক করা হয়। বলরামপুর থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরেই রয়েছে ঝাড়খণ্ড বর্ডার। ঝাড়খণ্ড বর্ডারেও নাকা চেকিং শুরু হয়। তবে বুধবার রাত পর্যন্ত এই ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিস।
পুলিস সূত্রের খবর, এই ঘটনায় তারা বেশ কিছু সূত্র পাওয়া গিয়েছে। তার ভিত্তিতেই দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। এই ঘটনার সঙ্গে ঝাড়খণ্ডের দুষ্কৃতীদের যোগ থাকতে পারে বলে অনুমান পুলিসের। প্রসঙ্গত, গত বছরই ২৯ আগস্ট পুরুলিয়া শহরের একটি স্বর্ণ বিপণীতে ডাকাতির ঘটনায় শোরগোল পড়েছিল রাজ্যে। তারপর ফের এধরনের ঘটনা স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ স্বর্ণব্যবসায়ীরা। তাঁরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে শুরু করেছেন। তাঁদের দাবি, ধনতেরসের দিন পুলিসের আরও সতর্ক ও কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা উচিত ছিল। - সিসি ক্যামেরায় তোলা ছবি।