• দীপাবলিতে হানা দিতে পারে চোরাশিকারিরা, গোরুমারায় সার্চ অপারেশন বনদপ্তরের
    বর্তমান | ৩১ অক্টোবর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: দীপাবলির উৎসবের মধ্যেই উত্তরবঙ্গে বন্যপ্রাণী নিধনে হানা দিতে পারে উত্তর-পূর্ব ভারতের চোরাশিকারিরা। তাদের টার্গেট, গোরুমারা ও জলদাপাড়ার একশৃঙ্গ গন্ডার। 

    গোয়েন্দা সূত্রে এমনই খবর পেয়ে বুধবার সকাল থেকে বিশেষ সার্চ অপারেশনে নামে বনদপ্তর। গোরুমারার ডিএফও দ্বিজপ্রতিম সেনের নেতৃত্বে এই বিশেষ অভিযান শুরু করেছেন বনকর্মীরা। এদিন সকালে নাগরাকাটা স্টেশন, ট্যাক্সি স্ট্যান্ড এলাকায় ভিনরাজ্যের চোরাশিকারিদের ইনফর্মারদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হয়। পাশাপাশি সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরির চেষ্টা করেন বনকর্মীরা। নাগরাকাটার সুখানি বস্তি, হাজিডাঙা, বামনডাঙা হয়ে বিকেলে গোরুমারার রামসাই এলাকায় অভিযান চালানো হয়। 

    রামসাই গন্ডারের অন্যতম আবাসস্থল। সেখানে তল্লাশি ও নজরদারিতে বিশেষ জোর দিচ্ছে বনদপ্তর। ডিএফও বলেন, জঙ্গল এলাকায় সার্চ অপারেশনে ব্যবহার করা হচ্ছে শক্তিশালী ড্রোন ক্যামেরা ও মিনি ড্রোন ক্যামেরা। কুনকির পিঠে চরে, হেঁটেও তল্লাশি চলছে। 

    বনদপ্তর সূত্রে খবর, অসমের দলগাঁও এলাকায় গন্ডার হত্যার অভিযোগে একটি বড় গ্যাংকে আগ্নেয়াস্ত্র সহ গ্রেপ্তার করেছে সে রাজ্যের বনদপ্তর ও পুলিসের যৌথ টিম। ধৃতদের জেরা করে জানা গিয়েছে, দীপাবলির উৎসবের আমেজের মধ্যেই উত্তরবঙ্গে বিশেষ করে গোরুমারা ও জলদাপাড়ায় চোরাশিকারিদের একটি টিম বন্যপ্রাণী নিধনের অপারেশন চালানোর ছক কষেছে। 

    মূলত লং রেঞ্জ পেট্রোলিংয়ের পাশাপাশি কর্ডন অ্যান্ড সার্চ এবং সার্ভিলেন্স ও সেন্সিটাইজেশন চালানো হচ্ছে দপ্তরের তরফে। ডিএফও বলেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে গন্ডার শিকারিদের দলে যে শ্যুটার থাকে, তারা উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন জঙ্গিগোষ্ঠীর সদস্য। এরা মূলত স্থানীয় বাসিন্দাদের সাহায্য নিয়েই বন্যপ্রাণ নিধনের অপারেশন চালায়। ফলে যারা এ ধরনের কাজে চোরাশিকারিদের গ্যাংকে সাহায্য করতে পারে, তাদের চিহ্নিত করার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তোলার লক্ষ্যেই এই অপারেশন। 

    ২০১৭-’১৮ সালে গোরুমারায় বেশকিছু গন্ডার নিধন হয়। অন্যদিকে, জলদাপাড়ায় গন্ডার হত্যা করে তার খড়্গ কেটে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা শেষ ঘটে ২০২১ সালে। কিন্তু এবার গোয়েন্দা সূত্রে খবর মেলার পর কোনওভাবে ঝুঁকি নিতে নারাজ বনকর্তারা। কারণ, এই মুহূর্তে জলদাপাড়ায় প্রায় তিনশো ও গোরুমারায় প্রায় ৬০টি গন্ডার রয়েছে। গত কয়েক বছরে উত্তরবঙ্গে গন্ডারের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় যেমন খুশি বনদপ্তর, তেমনই তাদের রক্ষা করা নিয়েও উদ্বিগ্ন তারা। - নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)