ভূতের ভয় কাটাতেই বালুরঘাট বাসস্ট্যান্ডে শুরু মোটরকালী পুজো
বর্তমান | ৩১ অক্টোবর ২০২৪
সংবাদদাতা, পতিরাম: বালুরঘাট শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকার মোটরকালী পুজো শহরের অন্যতম পুরনো। একসময় ভূতের ভয়ে শুনসান ওই এলাকায় পা রাখা যেত না। সেই ভয় কাটাতে বাসস্ট্যান্ড চত্বরে কালীপুজো শুরু হয়েছিল।
কষ্ঠিপাথরের এই কালীমায়ের পুজো বাস মালিক ও শ্রমিকরা আয়োজন করেন। পুজো কমিটির সম্পাদক মানস চৌধুরী বলেন, আমাদের এই পুজো বহু বছর আগে শুরু হয়। ঠিক সময় কেউ বলতে পারেন না। তবে, প্রথম থেকে একই নিয়মে পুজো হয়ে আসছে।
কেন এই ভূতের আতঙ্ক? শহরের প্রবীণদের কথায়, বালুরঘাট শহরের বড় বাজার সংলগ্ন এলাকার নাম ছিল ফটিকগঞ্জ। যেখানে আগে সপ্তাহে একদিন হাট বসত। এছাড়াও বর্তমান বালুরঘাট হাইস্কুলের কাছে একটি হাসপাতাল ছিল। যার কিছুটা দূরেই ছিল মর্গ। যা লোকমুখে মরা কাটা বা লাশকাটা ঘর বলে প্রচলিত ছিল। পরবর্তীতে জেলা হাসপাতালটির সঙ্গে মর্গ সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় রঘুনাথপুর এলাকায়।
কিন্তু পরিত্যক্ত মর্গ এবং মৃতদেহ বহনকারী গাড়ি থেকেই ভূতের আতঙ্ক ছড়িয়ে যায় এলাকায়। হাটের দিনগুলি ছাড়া সাধারণ মানুষ সেই পথ দিতে যাতায়াত করতে ভয় পেতেন। সেজন্য ওই এলাকায় একটি কষ্ঠিপাথরের মূর্তি স্থাপন করা হয়। বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ওই মূর্তিটি স্থাপন করা হয়েছিল বলে মোটরকালী নামেই পরিচিত। সেই মূর্তির রয়েছে নানা ইতিহাস। কষ্ঠিপাথরের সেই মূর্তিটি কুমারগঞ্জ ব্লকের বরাহার জমিদারি বাড়ির। বহু বছর আগে সেই বাড়ি থেকে কষ্ঠিপাথরের মূর্তিটি চুরি হয়ে যায়। পরবর্তীতে পাওয়া যায় মর্গের পাশে আত্রেয়ী খাঁড়িতে। সেখান থেকে পুলিস প্রশাসনের সহযোগিতায় মর্গের পাশে সেই মূর্তিটি বসিয়ে পুজো শুরু হয়।
মন্দিরের পুজোর জন্য আত্রেয়ী খাঁড়িতে ঘাটপুজো দিতে হয়। কথিত আছে, যেখানে ঘাটকালীর পুজো দেওয়া হয়, সেখানকার জল কখনও শুকিয়ে যায় না। বর্তমানে এই মন্দির বড় করে করা হচ্ছে। সেখানেই অস্থায়ী মণ্ডপ গড়েছেন উদ্যোক্তারা।