নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: এবার শিলিগুড়িতে আরও দেড়শো স্কুলে তৈরি হবে কিচেন গার্ডেন বা পুষ্টি বাগান। প্রশাসন সূত্রের খবর, প্রায় একমাস আগে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের জন্য স্কুলগুলিকে বরাদ্দ করা হয়েছে ৭ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা। তা দিয়ে স্কুলের ফাঁকা জায়গায় করা হবে সব্জি খেত। যা দিয়ে তৈরি হবে মিড ডে মিল। প্রশাসনের আধিকারিকরা বলেন, মিড ডে মিলে ছাত্রছাত্রীদের পুষ্টিকর খাবার দিতেই এই উদ্যোগ। শীঘ্রই সংশ্লিষ্ট বাগানগুলি তৈরি করা হবে।
স্কুলে কিচেন গার্ডেন তৈরির উদ্যোগ নতুন নয়। দীর্ঘদিন আগেই এই প্রকল্পের সূচনা হয়েছে। মিড ডে মিল প্রকল্পের সহায়ক হিসেবে ইতিমধ্যে সব্জি বাগান গড়ে নজর কেড়েছে বেশকিছু স্কুল। মিড ডে মিল প্রকল্পের নাম পিএম পোষণ হওয়ার পর থেকে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের নামকরণ করা হয় ‘স্কুল নিউট্রিশন গার্ডেন’। এবার সংশ্লিষ্ট গার্ডেন গড়তে প্রশাসনিক তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রের খবর, এবার শিলিগুড়ি মহকুমায় কিচেন গার্ডেন গড়া হবে ১৫৪টি স্কুলে। ইতিমধ্যে শহর ও ব্লক এলাকা পরিদর্শন করে স্কুলের তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। এজন্য স্কুলগুলি পাবে পাঁচ হাজার টাকা করে। এতে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের অংশীদারি রয়েছে। গত ২৫ সেপ্টেম্বর পুরসভা ও চারটি ব্লক প্রশাসনের কাছে বরাদ্দ করা হয়েছে ৭ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা।
ওই তালিকায় শিলিগুড়ি শহরের স্কুলের সংখ্যা ছ’টি। তাতে প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিক স্কুল রয়েছে। তালিকায় থাকা স্কুলগুলির নাম বুদ্ধভারতী ভুবনমোহন বিদ্যামন্দির, বিদ্যাচক্র প্রাথমিক স্কুল, ফণীভূষণ বিদ্যাপীঠ, রাজীবনগর প্রাথমিক স্কুল, নীলনলিনী বিদ্যামন্দির ও ফণীভূষণ মাধ্যমিক বিদ্যালয়। স্কুলগুলিতে নিয়মিত চলছে মিড ডে মিল। দৈনিক কোথাও ৬১, কোথাও ১৩০, আবার কোথাও ৩৩৭ জন ছাত্রছাত্রী মিড ডে মিল খায়। এবার স্কুলগুলির বাগানে বিভিন্ন মরশুমে শাক সহ লঙ্কা, বেগুন, মিষ্টিকুমড়ো, লাউ, পেঁপে সহ বিভিন্ন ধরনের সব্জি ফলবে।
পুরসভার সচিব অনাবিল দত্ত বলেন, ফাঁকা জায়গা ও সীমানা প্রাচীর থাকায় কিচেন গার্ডেনের জন্য ওই স্কুলগুলিকে বাছা হয়েছে। এজন্য স্কুলগুলিকে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের জন্য গ্রামীণ এলাকাতেও স্কুল চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, কিচেন গার্ডের জন্য গ্রামীণ এলাকায় বাছা হয়েছে ১৪৮টি স্কুল। যার মধ্যে নকশালবাড়ি ব্লকে স্কুলের সংখ্যা সর্বাধিক, ৬৯টি। এরবাইরে মাটিগাড়ায় ৩৬টি, খড়িবাড়িতে ২৮টি এবং ফাঁসিদেওয়ায় ১৫টি স্কুল চিহ্নিত করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট প্রকল্প নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি অভিভাবকদের একাংশও উচ্ছ্বসিত। সকলেরই বক্তব্য, খোলা বাজারে সব্জির দাম অস্বাভাবিক। যা আবার রাসায়নিক সার দিয়ে তৈরি। তা কিনে মিড ডে মিল চালানো সম্ভব নয়। এমন প্রেক্ষাটে প্রশাসন যে উদ্যোগ নিয়েছে তা প্রশংসনীয়। স্কুলের জমিতে জৈব উপায়ে তৈরি সব্জি দিয়েই হবে মিড ডে মিল। এতে ছাত্রছাত্রীরা পুষ্টিকর খাবার পাবে।