• হোমে পাহাড় বানাচ্ছে দার্জিলিং, দেখার নেশায় দেশছাড়া বাংলাদেশের কিশোর 
    বর্তমান | ৩১ অক্টোবর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: ছোটবেলা থেকে দার্জিলিং দেখার শখ। আবদারও করেছে বাড়িতে। কিন্তু পরিবারের লোকজন পাত্তা দেননি। সেই আক্ষেপে বরফে মোড়া কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে পাড়ার দুই দাদার সঙ্গে কুষ্টিয়ার বাড়ি থেকে পালায় বছর তেরোর মহিদুল আলম (নাম পরিবর্তিত)। বিনা পাসপোর্টে ভারতে ঢুকতে গিয়ে কোচবিহারের সীমান্তে বিএসএফের হাতে পাকড়াও হয় বাংলাদেশের ওই কিশোর। এরপর আদালত ঘুরে তার এখন ঠাঁই জলপাইগুড়ির কোরক হোমে। 

    কিছুদিন আগেই জেলা চাইল্ড লাইন কমিটির উদ্যোগে দার্জিলিং ভ্রমণে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল মহিদুলকে। চোখের সামনে বরফে মোড়া কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখে আর টয়ট্রেনে চড়ার আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়ে সে। স্বপ্নপূরণের খুশিতে এখন হোমেই কালীপুজোয় পাহাড় বানাচ্ছে মহিদুল। তার সঙ্গে হাত মিলিয়েছে মায়ানমার, পাকিস্তান সহ ওই হোমে থাকা বিভিন্ন দেশের কিশোররা।

    কালীপুজোয় পাহাড় বানানোর চল রয়েছে জলপাইগুড়িতে। সেই ট্র্যাডিশন থেকে বাদ পড়েনি কোরক হোমের ছেলেরাও। হোমের সুপার গৌতম দাস বলেন, আমাদের হোমে এই মুহূর্তে ৮৮ জন কিশোর রয়েছে। এর মধ্যে ৩৫ জন বিভিন্ন আঙ্গিক থেকে কালীপুজোয় পাহাড় বানাচ্ছে। এর মধ্যে অবশ্যই বাংলাদেশের ওই কিশোরের ভাবনা অনবদ্য। ছোট থেকেই পাহাড় দেখার শখ ছিল তার। পাহাড়ের নেশাতেই বাড়ি থেকে পালিয়ে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ঢুকতে গিয়ে ধরা পড়ে। সিডব্লুসি’র উদ্যোগে তাকে কিছুদিন আগে দার্জিলিং ঘুরিয়ে আনা হয়েছে। এখন সে নিজের মনের ভাবনা আর চোখে দেখা অভিজ্ঞতার মিশেলে হোমে দুর্দান্ত পাহাড় বানাচ্ছে।

    হোম সূত্রে খবর, দীপাবলি ও ভাইফোঁটার খুশি আবাসিক কিশোরদের মধ্যেও ছড়িয়ে দিতে একাধিক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আর পাঁচজন শিশু-কিশোরের মতো তারাও যাতে হোমের চার দেওয়ালের মধ্যে থেকেও আলোর উৎসবে মেতে উঠতে পারে, তারজন্য যাবতীয় আয়োজন করা হয়েছে। জেলার প্রশাসনিক কর্তাদেরও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, ছেলেদের হাতে তৈরি পাহাড় দেখার  জন্য।
  • Link to this news (বর্তমান)