• কোর্টের নথি ঘিরে বিতর্ক,  বনগাঁ জেল থেকে বাংলাদেশি নেতার মুক্তি, রহস্য চরমে  
    বর্তমান | ৩১ অক্টোবর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা ও সংবাদদাতা, বনগাঁ: আদালতে জামিন হল এক ভারতীয়ের। অথচ সেই জামিনের প্রেক্ষিতে রিলিজ অর্ডারে নাম লেখা হল এক বাংলাদেশির। বনগাঁ সংশোধনাগারে সেই রিলিজ অর্ডার দেখিয়ে অনুপ্রবেশের অভিযোগে ধৃত আওয়ামি লিগের এক যুবনেতা এখন ‘পগার পার’! গত ২৯ অক্টোবরের এই ঘটনা সামনে আসার পর ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিস। স্ক্যানারে আনা হয়েছে বনগাঁ আদালতের জিআর সেকশনের এক সাব-ইনসপেক্টর এবং এক কনস্টেবলকে। বারাসত জেলা আদালত তো ব঩টেই, অনভিপ্রেত এই ঘটনার খোঁজখবর শুরু করেছে কলকাতা হাইকোর্টও।  

    গত ২১ অক্টোবর বাগদা সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশের সময় পাকড়াও করা হয় বাংলাদেশের ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানার দিননগরের বাসিন্দা যুবলিগ নেতা খলিল খালাসিকে। তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশে খুনের অভিযোগ রয়েছে। খলিলের সঙ্গেই গ্রেপ্তার করা হয় সীমান্ত পারাপার করানোয় জড়িত ভারতীয় দালাল অভিজিৎ মণ্ডলকে। বনগাঁ এসিজেএম আদালতের নির্দেশে দু’জনকেই জেল হেফাজতে পাঠানো হয়। আগামী ৪ নভেম্বর পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য ছিল। সেদিন খলিলের আদালতে হাজির হওয়ার কথা। এরই মধ্যে গত মঙ্গলবার অভিজিতের তরফে আদালতে জামিনের আর্জি জানানো হলে, তা মঞ্জুর হয়। রাত হয়ে যাওয়ায় বুধবার সকালে অভিজিতের আইনজীবী গিয়ে জানতে পারেন, তাঁর মক্কেলের জামিনের নির্দেশের রিলিজ অর্ডারের কপি বনগাঁ জেলে পৌঁছয়নি। বরং খলিল খালাসি নামে ওই বাংলাদেশির রিলিজ অর্ডার জেলে পৌঁছনোয় কর্তৃপক্ষ তাকে ছেড়ে দিয়েছে। কীভাবে তা হল, জানতে আদালতের জিআর সেকশনে পৌঁছন আইনজীবী। নথি ঘাঁটতে গিয়ে ধরা পড়ে, অভিজিতের রিলিজ কপি রয়েছে গিয়েছে সেখানেই। অথচ অপর একটি রিলিজ অর্ডার তৈরি করে শুনানির আগেই জামিন পাইয়ে দেওয়া হয়েছে খলিলকে। আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে হইচই শুরু হওয়ার পর এসিজেএম (বনগাঁ) দেবাশিস পাঁজার স্বাক্ষর সম্বলিত আরেকটি রিলিজ অর্ডার তৈরি করে সংশোধনাগার থেকে বের করা হয় অভিজিৎকে। 

    বুধবার এ বিষয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেন বনগাঁ আদালতের আইনজীবীরা। তাঁদের দাবি, এই আদালতে টাকার বিনিময়ে নানা বেনিয়ম হচ্ছে। টাকা দিলেই কোর্ট লকআপ থেকে ফোনে কথা বলছে আসামিরা। বনগাঁ ল’ইয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সমীর দাস বলেন, ‘একজন আসামি সংশোধনাগার থেকে শুনানির আগেই রিলিজ পেয়ে গেল, অথচ তার আইনজীবীই জানেন না! এর মধ্যে বড় চক্রান্ত রয়েছে।’ জিআর সেকশন থেকে দেওয়া রিলিজ অর্ডারের কপিতে এসিজেএম’এর সই থাকায় ওই বাংলাদেশিকে ছেড়েছে সংশোধনাগার। ঘটনার বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছেন আইনজীবীরা। 
  • Link to this news (বর্তমান)