নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাকপুর: কালীপুজোর জাঁকজমক ও আড়ম্বরে বারাসত, নৈহাটির পরই আসে বারাকপুরের মণিরামপুর। তই অনেকে এই এলাকাকে কালীপুজোর সময় মিনি বারাসত বলেও আখ্যা দিয়ে থাকেন। এবারও মনিরামপুর সদরবাজার এলাকায় কালীপুজো ও দীপাবলি উৎসবের তোড়জোড় তুঙ্গে। মণিরামপুরে গঙ্গার ধার বরবর অনেকগুলি বিগ বাজেটের কালীপুজো হয়ে আসছে। থিমভাবনার অভিনবত্বে, আয়োজনের চাকচিক্যে এই পুজোগুলি টেক্কা দিতে পারে বারাসত বা নৈহাটির যে কোনও বড় পুজোকেও। তারই প্রস্তুতি চলছে জোরকদমে।
ঘুর্ণিঝড় ‘ডানা’র কারণে মণ্ডপ তৈরির কাজ কয়েকদিন বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে। দুর্যোগ কাটতেই জোরকদমে কাজ শুরু হয়েছে। নিত্যনতুন থিমে একে অপরকে টেক্কা দেওয়ার লড়াই চলছে পুজো উদ্যোক্তাদের মধ্যে। সব মিলিয়ে, আলোর উৎসবে শামিল হওয়ার জন্য মুখিয়ে রয়েছে মণিরামপুর। এখানকার বটতলা স্পোর্টিং ক্লাবের পুজোর এবারের থিম ‘মায়ের আঁচল’। ইন্দিরা গান্ধী ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের সামনে চলছে এই থিমভাবনা ফুটিয়ে তোলার কাজ। অন্যতম সংগঠক তপোব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘সংগ্রামী মায়েদের গল্প আমরা মণ্ডপসজ্জায় তুলে ধরছি। এবার আমাদের পুজো ৬৭ বছরে পড়ল।’
নয়াবস্তি মহাবীর সঙ্ঘের থিম ‘প্রয়াস’। পুজো কমিটির কর্মকর্তা শিবু যাদব বলেন, ‘এবার আমাদের পুজো ৭৯ বছরে পড়ল। লোহার সরঞ্জাম এবং বোতল দিয়ে মণ্ডপ তৈরি করা হচ্ছে। ইন্দ্রজিৎ পোদ্দার রয়েছেন থিম রূপায়ণের দায়িত্বে। আমাদের প্রতিমাতেও এবার থাকবে বিশেষ চমক। পুরো প্রতিমাই তৈরি করা হচ্ছে কাচ দিয়ে।’ মণিরামপুর ইউনিভার্স ক্লাবের এবারের থিম ‘যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই’। পুজো উদ্যোক্তা রানা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘পৃথিবীজুড়ে যুদ্ধের আবহ। শান্তির বড়ই অভাব। তাই শক্তির দেবীর কাছে আমাদের প্রার্থনা, যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই।’ সদরবাজার যুবক বৃন্দের এবারের পুজোর থিম ‘মৌচাক’।
পুজো কমিটির কর্মকর্তা রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যর কথায়, ‘এবার আমাদের পুজো ৬৫ বছরে পড়ল। নবদ্বীপের শিল্পীরা মণ্ডপ তৈরির কাজ করছেন। আমাদের প্রতিমা দক্ষিণাকালী। থিমের মাধ্যমে আমরা সবুজায়নের বার্তা দিতে চাই। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে মণ্ডপ তৈরির কাজ কিছুটা থমকে ছিল। এখন শেষ পর্যায়ের প্রস্তুতি চলছে।’ রবীন্দ্রনাথবাবুর বিরুদ্ধে স্থানীয় একটি পুজো কমিটি অভিযোগ করেছে, তিনি তাঁদের পুজো বন্ধ করে দিতে চান। সে বিষয়ে ওই পুজোকর্তা বলেন, ‘আমি জুয়া খেলার প্রতিবাদ করেছি। পুজো বন্ধ করার কথা কখনও বলিনি।’ নিজস্ব চিত্র