সাংসদের দেওয়া অ্যাম্বুলেন্স ‘গায়েব’ বলে অভিযোগ, দুর্গাপুর পঞ্চায়েত অফিসে আলোড়ন
হিন্দুস্তান টাইমস | ৩১ অক্টোবর ২০২৪
আজ কালীপুজো। আর তা নিয়ে মেতে উঠেছেন বাংলার মানুষজন। কিন্তু এই আবহে উৎসবের মরশুমকে সবাই নানাভাবে পালন করবেন। এই আবহে মানুষের সেবার জন্য দেওয়া সাংসদের অ্যাম্বুলেন্স ‘গায়েব’ হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। এমনকী ওই অ্যাম্বুল্যান্স চাক্ষুষ পর্যন্ত করেননি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান বলে অভিযোগ। দুর্গাপুরের মলানদিঘি গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে এবার চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে। তাহলে সেই অ্যাম্বুলেন্স কোথায় গেল? পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সাফাই দেন, পরিকাঠামোর অভাবে অ্যাম্বুল্যান্সগুলি গোডাউনে রয়েছে। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, এই অ্যাম্বুলেন্স পাওয়া না যাওয়ায় সাধারণ মানুষ পরিষেবা পাচ্ছেন না। রাতে বেলা প্রবীণ নাগরিক থেকে প্রসূতিকে যথেষ্ট কষ্ট করে হাসপাতালে পৌঁছতে হচ্ছে বলে অভিযোগ। অথচ ২০১৪ সালে বর্ধমান–দুর্গাপুরের তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ মমতাজ সংঘমিতা চৌধুরী মলানদিঘি গ্রাম পঞ্চায়েতকে একটি অ্যাম্বুল্যান্স দেন। এটা দেওয়ার কারণ ছিল, বিনামূল্যে যাতে আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকার মানুষজন চিকিৎসা করতে যেতে পারেন। কয়েক বছর সেই অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা মিলেও ছিল। হঠাৎ করে তা বন্ধ হয়ে যায়। এবার অ্যাম্বুল্যান্স গায়েব হওয়ার চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুলে জেলাশাসক, মহকুমাশাসক আর ব্লক প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দায়ের করলেন স্থানীয় মানুষজন।
এখন এই সাংসদের অ্যাম্বুলেন্স গায়েব হয়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষকে হাসপাতালে যেতে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করতে হয়। তাতে বহু টাকা গুণতে হয়। যা সাধ্যের মধ্যে নয়। বিশেষ করে গরিব মানুষের কাছে সেটা বাড়তি চাপ হয়ে দাঁড়ায়। এই অবস্থা দেখেই স্থানীয় মানুষজন প্রশাসনের কাছে চিঠি লিখেছেন। এখন এই অ্যাম্বুল্যান্স কোথায় আছে সেটা কেউ জানেন না। পঞ্চায়েতের অফিসাররা দায় এড়িয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ। তাঁদের বক্তব্য, ‘মলানদিঘিতে গোডাউনে অ্যাম্বুলেন্স আছে।’ সূত্রের খবর, সাংসদের ওই অ্যাম্বুল্যান্স মলানদিঘি গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসের পিছনের একটি গোডাউনে পড়ে আছে।
যদিও অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে সঠিক তথ্য কেউ দিতে চাইছেন না। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ভবানী ভট্টাচার্য বলেন, ‘বিরোধী দল কুৎসা রটাচ্ছে। যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। অ্যাম্বুল্যান্স পঞ্চায়েতেই রয়েছে। আর্থিক সমস্যার জন্য আর চালকের অভাবে চালানো যাচ্ছে না। দ্রুত অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা স্বাভাবিক করার ব্যবস্থা হচ্ছে।’ তবে দুর্গাপুর পশ্চিমের বিজেপি বিধায়ক লক্ষণ ঘড়ুইয়ের কথায়, ‘কোথায় কাটমানি চলছে সেদিকে নজর রয়েছে পঞ্চায়েতের। সাধারণ মানুষকে পরিষেবার দেওয়ার বেলায় নেই।’ যদিও মলানদিঘি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান পাকুমনি সোরেনের সাফাই, ‘আমরা বোর্ড গঠন করার পর থেকেই শুনেছি পঞ্চায়েতে একটি অ্যাম্বুল্যান্স ছিল। চোখে দেখিনি।’