মুর্শিদাবাদে যে কালীপুজোগুলো ঘিরে মানুষের ভিড় সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো আছড়ে পড়ে, তারমধ্যে রয়েছে বহরমপুর গোরাবাজার জজ কোর্ট মোড়ের স্যান্টাফোকিয়া ক্লাবের কালীপুজো। যে পুজো কয়েক দশক ধরে কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরীর কালীপুজো নামেই মুর্শিদাবাদে পরিচিত। বরাবর এই পুজোর প্রধান পৃষ্ঠপোষক অধীরবাবু। এই কালীপুজোর এবারের থিম নারী শক্তির জাগরণ। এবার এই পুজো পা দিল ৪৭ বছরে। বুধবার রাতে এই পুজোর উদ্বোধন হয়। ফিতে কেটে ও প্রদীপ জ্বালিয়ে পুজোর উদ্বোধন করেন ভারত সেবাশ্রম সংঘ-এর বহরমপুর চুঁয়াপুর শাখার সম্পাদক স্বামী মঙ্গলানন্দ মহারাজ। সঙ্গে ছিলেন সর্বভারতীয় কংগ্রেস কার্যকরী কমিটির সদস্য অধীর চৌধুরী। উপস্থিত ছিলেন কংগ্রেস নেতা মহফুজ আলম ডালিম, মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের প্রাক্তন সভাধিপতি শিলাদিত্য হালদার, বহরমপুরের প্রাক্তন বিধায়ক মনোজ চক্রবর্তী, জেলা মহিলা কংগ্রেস সভানেত্রী তথা প্রাক্তন বিধায়িকা ফিরোজা বেগম, বহরমপুর শহর কংগ্রেস সভাপতি অরিন্দম দাস, পুজো কমিটির সম্পাদক তথা কাউন্সিলার রঞ্জিত সিং প্রমুখ। পুজো ঘিরে কয়েকদিন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি প্রসাদ বিতরণের ব্যবস্থা রয়েছে বলে জানান পুজো কমিটির সম্পাদক।
পুজো উদ্বোধনের পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন অধীর চৌধুরী। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘এখানে যে মন্ডপসজ্জা করা হয়েছে সেটা মূলত নারী শক্তিকে উৎসাহিত করা হয়েছে। নারীদের অবমাননা, নারীদের অপমান তার মোকাবিলা করার বার্তা দেওয়া হয়েছে। নারী শক্তির উত্থানের কথা বলা হয়েছে। এই মন্ডপের ভেতরে সেটাই ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা হয়েছে বলে আমার মনে হলো।’ আরেকটি প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘নারী শক্তিকে সম্মান দিতে হবে। নারী শক্তির উত্থান দরকার। আর নারীকে বলতে হবে, নারী তুমি নিজেকে সুরক্ষা করার হিম্মত ধরো। নারী সমাজের প্রতি মানুষের সম্মানবোধ বাড়ুক এবং বাংলায় যেভাবে নারীদের উপর অত্যাচার, ধর্ষণ হচ্ছে, তাদের নৃশংসভাবে খুন করা হচ্ছে, তার মোকাবিলা হোক। তার হাত থেকে বাংলা মুক্ত হোক।’
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সুদূর জিয়াগঞ্জ থেকে অনুগামীদের নিয়ে জজকোর্ট মোড়ে এসেছিলেন কংগ্রেস নেতা রতন বালা। পেশায় শিক্ষক রতনবাবু বলেন, ‘এই পুজো আমাদের আবেগের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে। তরুণ বয়স থেকে এই পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছেন আমাদের নেতা অধীর চৌধুরী। তাঁর অনেক স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে এই পুজোকে ঘিরে। এই রাজ্যের তথা দেশের নানা প্রান্তের বহু বিশিষ্ট মানুষ, প্রখ্যাত শিল্পীরা বিভিন্ন সময়ে এই পুজোয় এসেছেন। সাংস্কৃতিক সন্ধ্যায় তাঁরা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন। প্রতিবছর নিয়ম করে শুধু বহরমপুর নয়, জেলার বিভিন্ন জায়গার মানুষ এই পুজো দেখতে আসেন। কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের ভালোবাসা জড়িয়ে রয়েছে এই পুজোর সঙ্গে।’