কথায় বলে, 'যে রাঁধে, সে চুলও বাঁধে'! আলোর উৎসব দীপাবলিতে আবারও একবার বহু প্রচলিত সেই প্রবাদ সত্যি প্রমাণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিনি পশ্চিমবঙ্গের প্রশাসনিক প্রধান। একইসঙ্গে, রাজ্যের শাসকদলের সর্বোময় নেত্রী। তাঁর ব্যস্ততা যে কখনও শেষ হয় না, সেকথা বলাই বাহুল্য। তবুও, সেই চরম ব্যস্ততার মধ্যেই প্রতি বছর নিষ্ঠাভরে তাঁর আরাধ্যা মা কালীর পুজো করেন মমতা। এবারও তার ব্যতিক্রম হল না।
এদিন সম্পূর্ণ অন্য মেজাজে দেখা গেল মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে। পুজোর জোগাড় ঠিক মতো হচ্ছে কিনা, সেদিকে নজর দেওয়া থেকে শুরু করে অতিথি আপ্যায়ন - সবই সামলালেন নেত্রীসুলভ দক্ষতার সঙ্গে।
এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে তাঁর বাড়ির রান্নাঘরেই মা কালীর জন্য ভোগ রান্না করতে দেখা গেল। এদিনের পুজোর নানা মুহূর্ত নিজের ফেসবুক পেজ ও এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করেছেন মমতা।
এক্স হ্যান্ডেলে একটি সুন্দর ভিডিয়ো পোস্ট করেছেন তিনি। সঙ্গে ক্য়াপশনে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, ‘আমার বাড়ির ব্রহ্মময়ীর চরণে শতকোটি প্রণাম জানাই। মায়ের স্নেহাশিসে মা-মাটি-মানুষের কল্যাণ হোক - এই প্রার্থনা আমার। ১৯৭৮ সালে প্রথম আমার মা এই পুজো শুরু করেন। এই বছর তা ৪৭ বছরে পা দিল। আমি যেন আজীবন এইভাবেই মায়ের সেবা করতে পারি - মায়ের চরণে এই কামনা আমার। সকলকে জানাই দীপাবলি এবং কালীপুজোর আগাম আন্তরিক শুভনন্দন।’
প্রসঙ্গত, প্রতি বছরের মতো এবারও মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের বসত ভিটের উঠোনেই কালীপুজোর আয়োজন করা হয়। তবে, বাড়ির পুজো হলেও তাতে ছিল থিমের ছোঁয়া।
মূলত, গ্রাম বাংলাকেই এই পুজোর সাজ-সজ্জার মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। পাকা ধানের শিস, কুলো, হাতপাখা, লক্ষ্মীর ভাঁড় প্রভৃতি দিয়ে সাজানো হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির উঠোন ও পুজো মণ্ডপ।
মা কালীর মূর্তিতেও রয়েছে ষোলোয়ানা বাঙালিয়ানা। হালকা নীল বর্ণের দেবী প্রতিমাকে পরানো হয়েছে লাল শাড়ি। দেবীকে নানাবিধ অলঙ্কারে সজ্জিত করে তোলা হয়েছে।
অন্য়ান্য দিন মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির আশপাশে কড়া নিরাপত্তার ঘেরাটোপ থাকলেও এদিন তা ছিল কিছুটা শিথিল। তাই বিধায়ক, সাংসদ, মন্ত্রীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষও পুজো দেখতে এবং মা কালীর দর্শন করতে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির উঠোনে পৌঁছে গিয়েছিলেন। সকলের জন্যই ভোগ বিতরণের ব্যবস্থা ছিল।
এদিনের পুজোয় একেবারে সাবেকি সাজে যোগ দিতে দেখা যায় মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপো তথা তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেও।