• বোলপুরের অগ্রগামী নাট্য সংস্থার পুজো উপলক্ষ্যে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা
    বর্তমান | ০১ নভেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, বোলপুর: এবার বোলপুরের অগ্রগামী নাট্য সংস্থার শ্যামাপুজো ৫১বছরে পা দিল। দুর্গাপুজো বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব হলেও বোলপুরের ১২নম্বর ওয়ার্ডের সারদাপল্লির‌ এই ক্লাবের পুজোর জন্য সারা বছর অপেক্ষা করে থাকেন এলাকার বাসিন্দারা। চারদিন ধরে শ্যামাপুজোর উৎসব চলে। ‌এই পুজোর মূল উদ্যোক্তা বোলপুর পুরসভার চেয়ারম্যান পর্ণা ঘোষ। ধর্মীয় বা সাংস্কৃতিক, দু’টি দিকই তাঁর তত্ত্বাবধানে হয়। বুধবার সন্ধ্যায় পুজোর উদ্বোধন করেন রাজ্যের কারামন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ। বৃহস্পতিবার ঘট ভরতে যাওয়া উপলক্ষ্যে এলাকার গৃহবধূরা সুসজ্জিত শোভাযাত্রার মধ্যে দিয়ে পাড়া পরিক্রমা করেন। ‌এরপর হোম-যজ্ঞের মধ্য দিয়ে শ্যামা মায়ের আরাধনা হয়। সত্তরের দশকে নকশাল বাড়বাড়ন্তে বোলপুরের সারদাপল্লি, কালিকাপুর রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল। নকশালদের সেই ভীতি ও অস্থিরতা কাটাতে সংস্কৃতিপ্রেমী যুবকরা এগিয়ে এসে পাড়ার লোকজনকে ঐক্যবদ্ধ করে তোলেন। ১৯৭২ সালে সমবেতভাবে অগ্রগামী নাট্য সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন।‌ শুরুর দিকে যে কয়েকজন সক্রিয় সদস্য ছিলেন তাঁদের মধ্যে অরুণচন্দ্র রায়, পূর্ণেন্দু ঘোষ, দনুজদলন ঘোষ, রামপদ মণ্ডল, কান্তিশ্বর রায় প্রমুখ ছিলেন উল্লেখযোগ্য। পরবর্তীকাল গৌরগোপাল ঘোষ, হেমগোপাল ঘোষ, সাক্ষীগোপাল ঘোষ, দিলীপ মুখোপাধ্যায়, বিষ্ণুপদ মুখোপাধ্যায় মতো পাড়ার বিশিষ্টদের সহযোগিতায় ক্লাবের সুনাম উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পায়। কালের নিয়মে অনেকেই প্রয়াত হয়েছেন। 

    এলাকার ধর্মীয় বিষয়টির কথা মাথায় রেখে শ্যামাপুজো শুরু হয়। মন্দির প্রতিষ্ঠার পর এলাকায় এই পুজো কার্যত উৎসবের চেহারা নিয়েছে। অগ্রগামীর সম্পাদক সুদীপ ভট্টাচার্য বলেন, পুরসভার চেয়ারম্যান পর্ণা ঘোষ ও তাঁর স্বামী তথা জেলা তৃণমূল কোর কমিটির অন্যতম সদস্য সুদীপ্ত ঘোষ এই পুজোর মূল উদ্যোক্তা। তাঁদের তত্ত্বাবধানে ক্লাবের বাকি সদস্যরা যাবতীয় আয়োজন করেন। বুধবারই এই পুজোর সূচনা হয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মন্ত্রী ছাড়াও বোলপুরের অ্যাডিশনাল পুলিস সুপার রাণা মুখোপাধ্যায়, ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের শান্তি মহারাজ সহ অন্যান্যরা। বৃহস্পতিবার পুজোর পাশাপাশি ঘট নিয়ে পাড়া পরিক্রমা হয়। মূলত এলাকার গৃহবধূরা এই শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন। সভাপতি প্রভাতকুসুম চৌধুরী বলেন, পুজোর পাশাপাশি চারদিন ধরেই বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও প্রতিযোগিতামূলক অনুষ্ঠান চলে। বসে আঁকো, আবৃত্তি, রবীন্দ্রসঙ্গীত, ক্যুইজ, বিতর্ক, হাঁড়িভাঙা প্রভৃতি প্রতিযোগিতা আয়োজন করে এলাকার সকলের মনোরঞ্জন করা হয়। এবছর এলাকার গৃহবধূদের অভিনীত নাটকও মঞ্চস্থ হবে। চেয়ারম্যান বলেন, সারা বছর পুরসভার দায়িত্ব ও রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও শ্যামাপুজো ও দীপাবলি উৎসব উপলক্ষ্যে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে থাকি। এইসময় এলাকাবাসীর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে পুজো ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করি। শ্যামামায়ের আরাধনা উপলক্ষ্যে উৎসবের চারদিন এলাকা কার্যত চাঁদের হাটে পরিণত হয়।
  • Link to this news (বর্তমান)