• আলোর উৎসবে মাতল গ্রাম-শহর
    বর্তমান | ০১ নভেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, সিউড়ি: আলোর উৎসবে মাতল বীরভূম। গ্রাম থেকে শহর সবদিকই আলোতে সেজে উঠল শ্যামামায়ের আরাধনায়। সারারাত ধরে চলল মায়ের পুজো। সন্ধ্যা নামতেই মানুষজনও কালীপুজো দেখতে মণ্ডপে মণ্ডপে বেরিয়ে পড়েন। বিশেষ করে প্রসিদ্ধ সতীপীঠ, তারাপীঠ সহ বিভিন্ন শক্তিপীঠগুলিতে পুজো দেওয়ার জন্য ভক্তদের ভিড় উপচে পড়ে। এদিকে সারা রাত ধরে বেপরোয়া বাইক আরোহীদের দৌরাত্ম্য কমাতে বেশি সংখ্যক পুলিসও রাস্তায় থাকছে। সিউড়ি-আহমদপুর দুর্ঘটনাপ্রবণ রাস্তায় মদ্যপ অবস্থায় বাইক চালালেই জরিমানা করা হবে বলে দাবি পুলিসের।

    বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বাজারগুলিতে একেবারে তিল ধরানোর জায়গা ছিল না। বিশেষ করে দশকর্মা ভাণ্ডার ও বৈদ্যুতিক আলো বিক্রির দোকানগুলিতে। তবে মাটির প্রদীপ বিক্রিও গতবারের তুলনায় অনেকটাই বেড়েছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। বিকেল থেকেই প্রতিটি এলাকাই আলোময় হয়ে ওঠে। প্রায় প্রত্যেকের বাড়িতেই আলো, প্রদীপ জ্বলে। উৎসবে মাতোয়ারা হয়ে ওঠেন সকলে। 

    তারাপীঠে জেলার পাশাপাশি ভিনরাজ্যে থেকেও ভক্তরা আসেন। সিউড়ির মৌমাছি, বড়কালীবাড়ি, বামদেবের মতো সুখ্যাতি প্রাচীন কালীমন্দিরগুলিতে পুজো দেওয়ার ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতন। তবে পিছিয়ে ছিল না থিমের পুজোগুলিও। রেডরোজ থেকে ত্রাণ সমিতি, রবীন্দ্রপল্লি সবদিকেই সন্ধ্যা থেকেই মানুষের ভিড়ে গিজগিজ করে। এবার থিমের পুজোগুলির বেশিরভাগই দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন মন্দিরের আদলে মণ্ডপ গড়েছে। মল্লিকপুরের ঝলকারাণী, সিউড়ি-২ ব্লকের বেহিরা কালীমন্দির, ইন্দ্রগাছা, বেলিয়া, নিড়িশা সবদিকেই মানুষদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। এইসব মন্দিরগুলিতে সারারাত ধরে পুজো চলে। বেশকিছু মন্দিরে ছাগ বলিও হয়। অন্যদিকে, দুবরাজপুরের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের শ্মশান কালীপুজোকে ঘিরে ভক্তদের ভিড় ছিল। 

    স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এখানে নিশিরাতে পুজো চলাকালীন মন্দিরের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। কেননা, এখানে পূজারি বিবস্ত্র অবস্থায় কাঁটার আসনে বসে নাকি মায়ের পুজো করেন। পাশাপাশি বলা হয়, মায়ের মূর্তি তৈরির সময় তাঁর আট অঙ্গে শ্মশান থেকে মৃত মানুষের হাড় এনে দেওয়া হয়। পুজোয় চ্যাং মাছপোড়া ও কারণ দিয়ে ভোগ দেওয়া হবে। অন্যদিকে, রামপুরহাট, বোলপুর, নলহাটি, লাভপুরের সতীপীঠ, শক্তিপীঠগুলিতেও নিয়ম মেনে পুজো চলে। এছাড়াও পুজোর রাতে পুলিসের চ্যালেঞ্জ হয়, ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ও বাইকবাজদের দৌরত্ম্য কমানো। এছাড়াও তন্ত্রসাধনার নামে কোনও অসামাজিক কাজ কোথাও চলছে কি না। পুলিসের দাবি, দু’টি বিষয়ই গুরুত্ব দিয়ে দেখার জন্য টিম গঠন করে কাজে নামা হয়েছে। জেলা পুলিসের এক অফিসার বলেন, আইনভঙ্গ করলেই জরিমানা করা হবে। আর জুয়ার ঠেক কিংবা কালাজাদুর নামে কিছু ঘটলেই অ্যান্টি ক্রাইম টিম পৌঁছে যাবে। পাশাপাশি এদিন রাত হতেই জেলাজুড়ে বিভিন্ন ‌জায়গায় আতশবা‌঩জি পুড়তে দেখা যায়। শব্দবাজির তাণ্ডব রুখতেও সক্রিয় ছিল পুলিস। আগে থেকেই বাজি ব্যসসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করে শব্দবাজি বিক্রি বন্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
  • Link to this news (বর্তমান)