সারাবছর পয়সা জমিয়ে কালীপুজো করেন রায়গঞ্জ মুক্ত সংশোধনাগারের আবাসিকরা
বর্তমান | ০১ নভেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, রায়গঞ্জ: উৎসব আসে, উৎসব যায়। কিন্তু উঁচু পাঁচিলে ঘেরা সংশোধনাগারে থাকা আবাসিকদের মনে এসব দাগ কাটতে পারে না। তবে ভিন্ন চরিত্রের সংশোধনাগার হিসেবে রায়গঞ্জ মুক্ত সংশোধনাগারের আবাসিকরা এবারও মেতেছেন কালীপুজোয়। বছরভর পয়সা জমিয়ে তাঁদের উদ্যোগে এই পুজোর আয়োজন। সেজন্য বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সাজোসাজো রব মুক্ত সংশোধনাগার চত্বরে। আলোর মালায় সেজে উঠেছে মুক্ত সংশোধনাগারের মন্দির চত্বর। সন্ধ্যায় সেই মন্দিরেই ঢাক বাজিয়ে আনা হয়েছে কালী মূর্তি। রাতভর হবে পুজো।
বহুদিনের পুরনো রায়গঞ্জ জেলা সংশোধনাগার। তারই একাংশে রয়েছে রায়গঞ্জ মুক্ত সংশোধনাগারটি। এখানে ২১ জন আবাসিক বর্তমানে রয়েছে। প্রত্যেকেই সাজাপ্রাপ্ত। কোনও না কোনওভাবে অপরাধে জড়িয়ে দীর্ঘ সময় সংশোধনাগারের গরাদই ছিল তাঁদের ঠিকানা। পরবর্তী সময়ে ভালো আচরণ সহ বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখে তাঁদের ঠাঁই হয়েছে রায়গঞ্জ মুক্ত সংশোধনাগারে। সেই আবাসিকরাই এই কালীপুজোর মূল আয়োজক।
রায়গঞ্জ মুক্ত সংশোধনাগার সূত্রে খবর, কালীপুজোর জন্য বছরভর অপেক্ষা করে থাকে আবাসিকরা। তারজন্য সারাবছর একটু একটু করে টাকা জমান তাঁরা। তারপর সব আবাসিকরা মিলে চাঁদা তুলে পুজোর আয়োজন করেন। তাঁরা অবশ্য জেলরক্ষীদের থেকেও কিছু টাকা চাঁদা তোলেন। আর তাতেই পুজোর আয়োজন ও ভোগের আয়োজন হয়। খিচুড়ি, তরকারি, পায়েস সবই থাকছে ভোগের পদ হিসেবে। যা পুজো শেষে বিলিও হবে জেলরক্ষী আবাসিকদের মধ্যে। অনেকের কাছেই এই পুজোকে ঘিরে ঢাকের শব্দ, মন্ত্র উচ্চারণ যেন কিছুটা মুক্তির অনুভূতি দেয়। মায়ের কাছে নিজেদের দুঃখ উজাড় করে দেন।
পুজো মিটলেও এখানে মূর্তি বিসর্জন হয় না। সারাবছর পুজো হয়। পরের বছর পুজোয় এই মূর্তি বিসর্জন হবে। যদিও কালীপুজো প্রসঙ্গে জানতে ফোন করা হলেও রায়গঞ্জ সংশোধনাগারের সুপার নিরঞ্জন সাহা ফোন ধরেননি।