• আলোর উৎসবের মধ্যেই আঁধার নামল বনগাঁর সিকদার পরিবারে
    বর্তমান | ০১ নভেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, বনগাঁ: ফোনে ছেলেকে বলেছিলেন, গোটা বাড়ি টুনি লাইট দিয়ে সাজিয়ে তুলতে। স্ত্রীকে ফোন করে বলেছিলেন, কালীপুজোর দিন তাড়াতাড়ি বাড়ি আসবেন। আসার সময় পুজোর বাজার করে আনবেন। বাবার কথা মতো গোটা বাড়ি টুনি লাইট দিয়ে সাজিয়ে তুলেছিলেন ছেলে। বাড়ির কালীমন্দিরে মূর্তিকেও সাজিয়ে তোলা হয়েছিল। সবই হয়েছিল বাবার কথা মতো। পুজোর দিন বাবা তাড়াতাড়ি এলেন ঠিকই। তবে নিথর হয়ে। নিজের চোখে দেখলেন না সাজানো বাড়ি। এক দুর্ঘটনায় আলোর উৎসবের মধ্যেই অন্ধকারে ডুবে গেল গোটা বাড়ি।

    বুধবার উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুর থানার চণ্ডীগড়ি গ্রামে তেল শোধনের একটি কারখানায় বিস্ফোরণ হয়। ঘটনায় মৃত্যু হয় বনগাঁর পল্লিশ্রী এলাকার বাসিন্দা বিশ্বজিৎ সিকদারের (৪৬)। ঘটনায় বেশ কয়েকজন জখমও হয়েছেন। পরবর্তীতে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে বলে পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে। পল্লিশ্রী এলাকায় বাড়িতে বিশ্বজিৎবাবু ছাড়াও থাকতেন স্ত্রী স্বপ্না, মেয়ে দেবিকা ও ছেলে সুজিত সিকদার। বাড়ির একমাত্র রোজগেরে ছিলেন বিশ্বজিৎবাবু। কারখানা এলাকাতেই থাকতেন। ১৫-২০ দিন অন্তর বাড়ি আসতেন। দুর্গাপুজোর পর কাজে গিয়েছিলেন। কালীপুজোর দিন আসার কথা ছিল বাড়িতে। তার আগেই ঘটে যায় দুর্ঘটনা। স্ত্রী স্বপ্না সিকদার বলেন, বুধবার সকালে ফোন করে বলেছিল কালীপুজোর দিন তাড়াতাড়ি বাড়ি আসবে। ছেলেকে টুনি লাইট দিয়ে বাড়ি সাজাতে বলেছিল। বাড়ির কালী মন্দিরে পুজো হবে। তার বাজার করে আনবে বলেছিল। কিন্তু আর এল না। সব শেষ হয়ে গেল।

    বৃহস্পতিবার তাঁর বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল গোটা বাড়ি টুনি লাইট দিয়ে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। কিন্তু ঘরের বারান্দায় বসে কেঁদেই চলেছেন স্ত্রী-মেয়ে ও আত্মীয়রা। বাবার দুর্ঘটনার খবর পেয়ে এদিন সকালে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বারাসত পৌঁছে গিয়েছেন ছেলে। স্ত্রী স্বপ্না দেবী জানান, বাড়ির একমাত্র রোজগেরে ছিলেন তিনি। এবার আমাদের কী হবে, জানি না। কীভাবেই বা সংসার চলবে।
  • Link to this news (বর্তমান)