কালীপুজোয় মাথায় হাত পড়েছে আম জনতার। কলকাতায় আজ থেকে এক লাফে ৬১ টাকা বাড়ল এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডারের দাম। তবে এই মূল্যবৃদ্ধি ঘটেছে বাণিজ্যিক রান্নার গ্যাসের ১৯ কেজি ওজনের সিলিন্ডারের ক্ষেত্রে। কলকাতা সহ দেশের অন্যত্র ঘরোয়া গ্যাস সিলিন্ডারের দাম অপরিবর্তিতই রাখা হয়েছে দিওয়ালির আবহে। তবে তা সত্ত্বেও ঘরোয়া গ্যাস সিলিন্ডার কিনতে গিয়ে নাকি কলকাতার বহু গৃহস্থের বেশি টাকা খসছে! অভিযোগ, বহু গ্রাহকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টেই নাকি নিয়মিত জমা পড়ছে না রান্নার গ্যাস সিলিন্ডারের ভর্তুকি। সম্প্রতি আনন্দবাজারের রিপোর্ট অনুযায়ী, অনেক ক্ষেত্রেই গ্রাহকের অজান্তেই কোনও না কোনও কারণে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে গ্যাস সংযোগের 'লিঙ্ক' বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে। আর এর জেরেই থমকে যাচ্ছে যৎসামান্য ভর্তুকি।
রিপোর্ট অনুযায়ী, ১ নভেম্বর থেকে কলকাতায় ১৯ কেজি বাণিজ্যিক গ্যাস সিলিন্ডারের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১,৯১১.৫ টাকা। এর আগে অক্টোবরে ১৯ কেজি বাণিজ্যিক গ্যাস সিলিন্ডার কিনতে ১,৮৫০.৫ টাকা খরচ হচ্ছিল। ১৪.২ কেজি রান্নার গ্যাস সিলিন্ডারের দাম অবশ্য পালটানো হয়নি। কলকাতায় ভর্তুকিহীন ১৪.২ কেজি রান্নার গ্যাস সিলিন্ডারের দাম পড়ছে ৮২৯ টাকা। উল্লেখ্য, সিলিন্ডার পিছু ভর্তুকি বাবদ কলকাতা ও শহরতলির গ্রাহকদের অ্যাকাউন্টে ঢোকার কথা ১৯.৫৭ টাকা করে। এদিকে বিভিন্ন জেলায় সেই ভর্তুকির পরিমাণ ১০। তো কোথাও আবার প্রায় শূন্য। তবে আক্ষরিক অর্থে নগন্য ভর্তুকি হলেও সিলিন্ডার কিনতে কলকাতাবাসী গ্রাহকের 'খরচ' হওয়ার কথ প্রায় ৮১০ টাকা। তবে যদি সেই ভর্তুকি অ্যাকাউন্টে না এসে থাকে, তাহলে 'খরচ' তো অজান্তেই বাড়ছে। রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, গ্যাসের ভর্তুকি বাবদ কয়েক কোটি টাকা জমা পড়েনি গ্রাহকদের অ্যাকাউন্টে।
উল্লেখ্য, ভর্তুকির অঙ্ক এত কম যে, বহু গ্রাহক বিষয়টি খেয়াল করেননি। আবার দাবি করা হচ্ছে, আধারভিত্তিক যে সংযুক্তিকরণ হচ্ছে, তাতে কিছু সমস্যার জেরে অনেকের 'লিঙ্ক' বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে। এর জেরেই গ্রাহকদের একাংশের কাছে ভর্তুকি পৌঁছোচ্ছে না। এদিকে সাইবার অপরাধের সমস্যার কারণেও অনেকের নাম বাদ চলে যাচ্ছে বলে দাবি করা হয়েছে। তবে এরই মধ্যে পদক্ষেপও করছে কর্তৃপক্ষ। রিপোর্ট অনুযায়ী, গত এক বছরে যে সব গ্রাহকদের গ্যাস সিলিন্ডারের ভর্তুকি পেতে সমস্যা হয়েছে, তাঁদের একটি তালিকা জ্বালানি সংস্থাগুলিকে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এদিকে যে সকল এলপিজি গ্রাহকদের অ্যাকাউন্টে গত এক বছরে ভর্তুকি জমা পড়েনি, তাঁদের তালিকা সংশ্লিষ্ট গ্যাস ডিস্ট্রিবিউটরদের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত জ্বালানি সংস্থাগুলি। সেই সব গ্রাহকদের কেওয়াইসি যাচাই প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করতে বলা হয়েছে। উল্লেখ্য, কোনও গ্রাহক আর ভর্তুকি নিতে না চাইলে, তা লিখিত ভাবে জানিয়ে দিতে হবে।